শেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৮ নভেম্বর : বিগত কালীপূজোর আবহে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানা এলাকার একাধিক মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে । দেবদেবীর সোনারূপার গহনাসহ বেশ কিছু পূজার উপকরণ চুরি হয় । ওই সমস্ত ঘটনায় উদয় বেদ, পবন বেদ ও সুলতান বেদ নামে ৩ দুষ্কৃতকারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । ধৃতদের মধ্যে একজনের বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের জামুরিয়ায় ও বাকি দুজনের বাড়ি বীরভূমের সাঁইথিয়া এলাকায় । চুরি করা সামগ্রী উদ্ধারের পাশাপাশি চক্রের বাকি সদস্যদের চিহ্নিত করতে পুলিশ ধৃতদের নিজের হেফাজতে নেয় । হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আজ তাদের বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হয় । পুলিশ ধৃতদের ফের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় । বিচারক ধৃতদের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বলে জানা গেছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতরা বানজারা দলের সদস্য। গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাদুড় বা চামচিকি ধরা ও মধু সংগ্রহ করে বেড়ায় তারা । কালীপুজোর মরশুমে বিভিন্ন গ্রামে খাবার সংগ্রহের অছিলায় গিয়ে রেইকি করছিল । তারপর গভীর রাতে হানা দিয়ে একের পর এক মন্দিরের তালা ভেঙে দেবদেবীর গহনা ও নিত্যসেবার কাজে ব্যবহৃত কাঁসাপিতলের যাবতীয় বাসনপত্র নিয়ে চম্পট দেয় ৷ এভাবে ভাতার থানার আমরুণ এলাকায় একাধিক মন্দির, আউশগ্রামের ব্রজপুর ও দেয়াশা এলাকায় কালীমন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটায় ওই দলটি ।
পুলিশ সূত্রে খবর,অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি দল গঠন করা হয় । দলটি সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গত ১০ই নভেম্বর রাত্রে আউডগ্রামের ভেদিয়ায় সেতুর নিচে অভিযান চালায় পুলিশের একটা দল । সেখান থেকেই পবন, উদয় ও সুলতানকে আটক করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা কবুল করে তারা । এরপরই তাদের গ্রেফতার করে আদালতে তুলে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায় ভাতার থানার পুলিশ৷ হেফাজতে থাকাকালীন ধৃতদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া বেশ কিছু অলংকার উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে । বাকি অলংকার উদ্ধার করতে বা এই ঘটনার সঙ্গে আর আর কেউ যুক্ত আছে জানতে আজ পুনরায় ধৃতদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বর্ধমান আদালতে পেশ করে ।।