এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,১৯ জুলাই : বাঁকুড়া জেলার কালপাথর এলাকার জওহর নবোদয় বিদ্যালয় নামে একটি কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলের অধ্যক্ষসহ ৮ জনকে শিশু পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করল পুলিশ । পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ধৃত অধ্যক্ষের নাম কমলকুমার রাজোরিয়া । বাকি ৭ জনের মধ্যে রয়েছেন ওই স্কুলের শিক্ষিকা সুষমা শর্মাও । তিনিও পাচারচক্রে সরাসিরি জড়িত বলে অভিযোগ । বাকি ধৃতদের মধ্যে রয়েছে মোট তিন জন করে মহিলা ও পুরুষ । উদ্ধার হয়েছে মোট পাঁচটি শিশুকন্যা । সোমবার ধৃতদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে অধ্যক্ষ-সহ ৩ জনকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক । বাকিদের ২ আগষ্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, রবিবার কমল কুমার রাজোরিয়া কালপাথর এলাকায় দু’টি শিশুকে জোর করে একটি মারুতি ভ্যানে তোলার চেষ্টা করছিলেন । বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় । তারপর বেশ কিছু লোকজন জড়ো হয়ে গাড়িটি ঘিরে রাখে । এরই মধ্যে বেগতিক বুঝে চম্পট দেয় অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ । এরপর গাড়িতে থাকা ৪ মহিলাকে আটক করা হয় । উদ্ধার হয় দুই শিশুকন্যা । পরে অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আসল সত্য প্রকাশ্যে আসে । তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে । পাশাপাশি উদ্ধার হয় আরও ৩ শিশুকন্যা ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুরের মেনগেট ও কাদারোড এলাকার বাসিন্দা মহিলাদের মোটা টাকা দিয়ে তাঁদের কন্যাসন্তানদের কিনে এনেছিল রাজস্থানের বাসিন্দা কমল কুমার রাজোরিয়া । তারপর সেই শিশুগুলিকে রাজস্থান সহ বিভিন্ন জায়গায় পাচার করার মতলব করছিল । কিন্তু স্থানীয়দের তৎপরতায় শিশু পাচার চক্রের পর্দাফাঁস হয় ।
ধৃত অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ‘প্রায় ৯ মাস আগে কাদারোড এলাকা থেকে একটি শিশুকে এইভাবে কিনে এনে জহর নবোদয় স্কুলেরই সুষমা শর্মা নামের এক নিঃসন্তান শিক্ষিকাকে বিক্রি করেছিলেন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া । যে দুটি শিশুকে রবিবার গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল তাদেরও সম্প্রতি কিনে এনে অধ্যক্ষ তাঁর নিজের কোয়ার্টারে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ ৷ উদ্ধার হওয়া শিশুগুলিকে কোথা থেকে ও কি উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ।।