এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঝাড়খণ্ড,১৭ নভেম্বর : মুসলিম ভোটব্যাংককে সন্তুষ্ট করতে দেশের কোনো কোনো রাজ্যে নামাজ পড়ার জন্য শুক্রবার স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে । এনিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা । ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে, শুক্রবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্কুলগুলিতে সাপ্তাহিক ছুটির বিষয়টিকে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে পরিণত করেছেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন যে শুক্রবার যদি নামাজ পড়ার জন্য স্কুলে ছুটি দেওয়া যায়, তবে মঙ্গলবার হনুমান চালিসা পাঠ করার জন্য কেন ছুটি দেওয়া যাবে না ? ঝাড়খণ্ডে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘আমরা হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক নই। সংবিধান প্রণয়নের সময়, হিন্দু নেতারা সর্বান্তকরণে রবিবারকে জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে সমর্থন করেছিলেন, কিন্তু এখন শুক্রবার স্কুলগুলি বন্ধ করা হচ্ছে। এটা কি সত্য ?’ তিনি বলেন,’মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য যদি শুক্রবার স্কুল বন্ধ রাখা যায়, তবে হিন্দু শিশুদের জন্য কেন মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হবে না ?’
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন যে এটি কেবল ধর্মীয় পক্ষপাতের বিষয় নয়, এটি সমাজে অসমতা ও উত্তেজনা তৈরি করছে। আমরা কখনই সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করিনি, কিন্তু অন্যদের দাবির মুখে আমাদের ঐতিহ্যকে উপেক্ষা করা হচ্ছে ।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী এক্স-এ তার বিবৃতিও শেয়ার করেছেন এবং রাজ্যের জেএমএম-কংগ্রেস সরকারের নিন্দা করেছেন। সরমার অভিযোগ, এই ছুটি তোষণের রাজনীতির অংশ।এই বিতর্ক নতুন নয়। ঝাড়খণ্ড ও বিহারের অনেক জেলায় শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়ার রীতি চলে আসছে গত কয়েক বছর ধরে। জামতারা এবং দুমকার ৩৩ টি স্কুলে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করা হলে ঝাড়খণ্ডে এই সমস্যাটি প্রথম দেখা দেয়। এর পরে বিষয়টি বিহারের কিষাণগঞ্জে পৌঁছে, যেখানে ৩৭ টি স্কুল একই ঐতিহ্য গ্রহণ করেছে।
প্রসঙ্গত,ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন দুটি ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে,১৩ নভেম্বর প্রথম ধাপের পরে, এখন ২০ নভেম্বর দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ২৩ নভেম্বর ভোট গণনা হবে। বিজেপি হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ঝাড়খণ্ড বিধানসভার সহ-ইনচার্জ করেছে। এদিকে, ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের সময় শুক্রবার ছুটির দিন এবং হনুমান চালিসা নিয়ে বিতর্ক রাজনীতিকে উত্তপ্ত করেছে । তবে শুধু নামাজের জন্য স্কুলে শুক্রবার ছুটির ঘটনাই নয়, ঝাড়খণ্ডে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশ নির্বাচনের একটা বড় ইস্যু । ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশ এতটাই বেশি ঘটেছে যে সাঁওতাল পরগণাসহ বহু এলাকার জনবিন্যাসের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে । এখন দেখার বিষয় এই দুই ইস্যু নির্বাচনী ফলাফলে প্রভাব ফেলবে, নাকি শুধুই বিতর্ক থেকে যাবে।।