এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৬ নভেম্বর : হিন্দুদের সঙ্গে পশুর মত ব্যবহার করছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও সেদেশের মুসলিমরা । গত ৫ নভেম্বর বাংলাদেশের চট্টগ্রামের হাজারীগল্লিতে মুসলিম কট্টরপন্থী ও সেনাবাহিনীর যৌথ হামলার মুখে পড়তে হয়েছিল হিন্দুদের । ইসলামি কট্টরপন্থীদের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও স্থানীয় হিন্দুদের নির্মমভাবে মারধর করে,ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর চালায় । এই যৌথ হামলায় বহু হিন্দু গুরুতর আহত হয় । তাদের মধ্যে এক হতভাগ্য হিন্দু হলেন মিলন সরকার । মধ্য বয়সী ওই ব্যক্তিকে বাংলাদেশের সেনা এমন নির্মমভাবে মারধর করেছে যে তার দু’পায়ের হাড় ভেঙে গেছে । বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন । একজন সন্ত্রাসবাদীর কায়দায় দিনভর তার পায়ে মোটা শিকল পরিয়ে রেখে দিয়েছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী । সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বাংলাদেশের জঙ্গি সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা ।
জানা গেছে,চট্টগ্রামের হাজারীগল্লির বাসিন্দা মিলন সরকারের স্ত্রী মোনা সরকার ক্যান্সার আক্রান্ত । স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বসান্ত মিলনবাবু । জনমজুরে কাজ করে স্ত্রীর চিকিৎসা ও এক নাবালক পুত্রসন্তানকে নিয়ে তিন জনের সংসারের কোনো রকমে অন্নসংস্থান করেন তিনি । গত ৫ নভেম্ভর স্ত্রীর জন্য দোকান থেকে ওষুধ আনতে বের হয়েছিলেন মিলনবাবু । সেই সময় বাংলাদেশের সেনা জওয়ানরা বিনা প্ররোচনায় তাকে নির্মমভাবে লাঠিপেটা করে । ভেঙে যায় দু’পায়ের হাড় । আর তখন থেকেই তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । এদিকে তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী মোনাদেবীর চিকিৎসা তো দুরের কথা, নাবালক ছেলেকে নিয়ে কার্যত অনাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই অসুস্থ অসহায় মহিলার ভিডিও প্রকাশ করার পর কয়েকজন স্থানীয় অবস্থাপন্ন হিন্দু তার পরিচর্জার জন্য এগিয়ে আসে ।
এদিকে এই ঘটনায় বাংলাদেশের জঙ্গি সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন হিন্দুরা । হিন্দু নিউজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে লেখা হয়েছে, ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীর জন্য হাজারীগল্লিতে ঔষুধ আনতে গিয়েছিলেন মিলন, তাকে মিথ্যা মামলায় সেনাবাহিনী ধরে বেধরক পিটিয়ে হাড়ভেঙ্গে এখন সরকারী পৃষ্টপোষকতায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা করাচ্ছে একজন কয়েদির মতন৷ এদিকে তার অসহায় সন্তান ও ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী অনাহারে অর্ধাহারে অসুখে কষ্ট পাচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র কতটা নির্মম হলে একটি ধর্মের জনগোষ্টীর উপর এমন অমানবিক নির্যাতন চালাতে পারে। প্রকৃত দোষীদের না ধরে সাধারন মানুষদের এভাবে অমানবিক নির্যাতন মানবাধিকারের ষ্পষ্টত লঙ্ঘন। মিলন বাবুর দ্রুত মামলা হতে দায়মুক্তি কামনা করছি ও নিরাপরাদে তাকে শারিরিক নির্যাতন করার জন্য ক্ষতিপূরন দাবী করছি। আর মন হতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যারা এই ব্যক্তিকে নিরাপত্তাবাহিনীর পোষাক পড়ে মেরেছে তাদের বংশ নির্বংশ হউক আর তাদের স্ত্রী সন্তান সন্ততির এমন পরিনতি হোক। আশীশ দাশ দাদার ওয়াল হতে ছবিগুলো নিলাম। বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে ।’
অভ্রনীল হিন্দু ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন,’২০২৪ সালের ৫ নভেম্বরের ভয়াল রাতে চট্টগ্রামের হাজারীগল্লিতে মিলন সরকারসহ হিন্দু ব্যক্তিদের নির্মম মারধর ও গণগ্রেফতার করা হয়। স্ত্রীর জন্য ক্যান্সারের ওষুধ কিনতে হাজারীগল্লি গিয়েছিলেন তিনি।’ আর একটা এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘০৫/১১/ ২০২৪ তারিখে হাজারীগালীতে, বেসামরিক পোশাক পরা কিছু মুসলিম পুরুষ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে সক্রিয় ছিল, হিন্দুদের সনাক্ত করতে সহায়তা করেছিল। অনেক প্রত্যক্ষদর্শী এই বিবরণগুলি ভাগ করেছেন, যা এখন সিসিটিভি ফুটেজ দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে।’ এই সমস্ত দাবিতে স্পষ্ট যে কি নিদারুণ নিষ্পেষিত হচ্ছে বাংলাদেশের হিন্দুরা ।।