এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুম্বাই,১৪ নভেম্বর : ছত্তিশগড়ের কোন্ডাগাঁও থেকে ২২ বছর বয়সী এক আদিবাসী তরুনীকে ফিরোজ খান নামে এক মুসলিম যুবক অপহরণ করেছিল। এরপর তাকে মুম্বাইয়ের ধারাভিতে নিয়ে গিয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে ধর্ষণ করে । হাত-পা বেঁধে অন্ধকার ঘরে রাখা হয় তাকে। শুধু তাই নয় অভিযুক্ত ফিরোজ মেয়েটির যৌনাঙ্গে রাসায়নিক ঢেলে পুড়িয়েও দেয় বলে অভিযোগ । অভিযুক্তকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
ঘটনাটি বস্তার বিভাগের কোন্দাগাঁও জেলার মাকদি থানা এলাকার একটি গ্রামে। তরুনী অভিযোগ করেছে যে ২০২৩ সালে,তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা করাতে কোন্ডাগাঁও হাসপাতালে যান। সেখানে ফিরোজ বোতল ভেঙ্গে তার গলায় রেখে হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে অপহরণ করে। সে নির্যাতিতার মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মুম্বাইয়ের ধারাভিতে নিয়ে যায় এবং তাকে পনবন্দি করে রাখে ।
নির্যাতিতা জানান, ২০২২-২৩ সালে তার মোবাইলে একটি অচেনা নম্বর থেকে একটি কল আসে। সে বারবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং অপরিচিত নম্বরটি ব্লক করলেও ফিরোজ তার পিছু ছাড়েনি । সে তরুনীকে তার সাথে দেখা করতে বলেছিল, কিন্তু তরুনী প্রত্যাখ্যান করেছিলেন । একদিন নির্যাতিতার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তিনি চিকিৎসার জন্য কোন্ডাগাঁও যান। ফিরোজ বিষয়টি জানতে পেরে তার পিছু নিয়ে সেখানে পৌঁছায়।
নির্জন জায়গা দেখে ফিরোজ তরুনীকে আটকে তার গলায় একটি ভাঙা কাঁচের বোতল রেখে তাকে অপহরণ করে মুম্বাইয়ে নিয়ে যান। এ সময় ফিরোজ নির্যাতিতার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং তার পরিবারকে একটা বার্তা পাঠায় । ওই বার্তায় সে লিখেছে, “আমি ভালো আছি। আমি একটি ছেলের প্রেমে পড়েছি এবং তার সাথে সংসার করতে হতে যাচ্ছি। তোমরা আমার জন্য চিন্তা করো না।”
আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০২৩ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে ফিরোজ ও ভিকটিমদের পরিচয় হয়। কথাবার্তার সময়ই মেয়েটিকে ফাঁদে ফেলে সে । অপহরণের প্রশ্নে প্রশাসন বলছে, অভিযুক্ত ফিরোজ ইউপির সুলতানপুরের বাসিন্দা এবং সে মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে কোন্ডাগাঁও এসেছিল। ২০২৩ সালের ৭ জুন, তারা দুজনেই মুম্বাই পালিয়ে যায়। তারা সেখানে এক বছরেরও বেশি সময় অবস্থান করে, তারপরে ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্যাতিতা কোন্ডাগাঁওয়ে ফিরে আসে।
যাই হোক, দুজনেই মুম্বাই পৌঁছে যায় । মেয়েটির অভিযোগ, ফিরোজ মুম্বাইয়ের একটি কারখানায় কাজ করেন। ধারাভি বস্তির একটি ছোট ঘরে তাকে আটকে রেখেছিলেন। এমনকি জানালাও ছিল না ওই ঘরে । আলো পর্যন্ত ছিল না । মেয়েটির অভিযোগ, ফিরোজ সকালে কাজের জন্য কারখানায় গেলে কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে দিত। সে তাকে মারধর করত এবং চুল ধরে টানত । মেয়েটি বলে যে সে তাকে খাবারও দেয়নি । মেয়েটি সেখানে কাউকে চিনত না, তাই নীরবে নিপীড়ন সহ্য করে। মেয়েটি জানায়, ফিরোজ গত দেড় বছর ধরে তাকে একটানা ধর্ষণ করে আসছিল। যখনই সে প্রত্যাখ্যান করত, সে তাকে খুব মারধর করত। তিন-চার মাস আগে ফিরোজকে বাধা দিলে সে তার গোপনাঙ্গে রাসায়নিক ঢেলে পুড়িয়ে দেয়।
মেয়েটি জানায়, একদিন ফিরোজ তার মোবাইল বাড়িতে ভুলে যায়। এরপর মোবাইল থেকে একটি নম্বর বের করেন। ওই নম্বরটি ফিরোজের কারখানার মালিকের। মেয়েটি কারখানার মালিককে ডেকে পুরো ঘটনা খুলে বলে। এতে মালিক তাকে সাহায্য করেন। সে রেলস্টেশনে পৌঁছে তারপর সেখান থেকে তার গ্রামে পৌঁছায় । যখন তিনি বাড়িতে পৌঁছে তার পরিবারের সদস্যদের সমস্ত কিছু জানান, তখন তিনি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন।
পুলিশ মেয়েটিকে কোন্ডাগাঁও জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে, যেখানে তার চিকিৎসা চলছে। কোন্ডাগাঁও জেলা হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডাঃ আরসি ঠাকুর জানান, গত ৫ নভেম্বর নির্যাতিতা বমি, দুর্বলতা ও পেটে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসে । পরীক্ষার সময়, গাইনোকোলজিকাল পরীক্ষায় গর্ভাবস্থার পরীক্ষা নেগেটিভ এসেছে। গোপনাঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
সিভিল সার্জন জানান, মেয়েটির শরীরে কোনো পোড়া বা আঘাতের চিহ্ন নেই। অভিযুক্ত ফিরোজকে উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর থেকে গ্রেফতার করেছে কোন্ডাগাঁও পুলিশ। তাকে কোন্ডাগাঁওয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৌশলেন্দ্র দেব প্যাটেল জানিয়েছেন যে মাকদি থানার পুলিশ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।।
★ ওপি ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনের অনুবাদ ।