এইদিন ওয়েবডেস্ক,উস্তি(দক্ষিণ ২৪ পরগণা),০৯ নভেম্বর : পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার উস্তির এক বিজেপি নেতার রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল তাঁরই দলের কার্যালয় থেকে । শুক্রবার গভীর রাতে উস্তি থানার দ্বীপের মোড়ের কাছে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে পৃথ্বীরাজ নস্কর (৩৩) নামে ওই বিজেপি নেতার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । পৃথ্বীরাজবাবু মথুরাপুর লোকসভার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার কনভেনার ছিলেন । তার খুনের ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার । তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেজে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষার তাগিদে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আবার শহীদ হলেন ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সক্রিয় সৈনিক। তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর আজ মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সোশ্যাল মিডিয়া কনভেনর পৃথ্বীরাজ নস্করের নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে মন্দিরবাজারের দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে। কয়েকদিন আগে তাঁকে তাঁর নিজের এলাকা থেকেই তুলে নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীবাহিনী। নৃশংস খুনের আগে পৃথ্বীরাজের উপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে।
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে তিনি লিখেছেন,’পুলিশের কাছে ওর পরিবার একাধিকবার সহায়তা চাইলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাটুকার পুলিশ-প্রশাসন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় থাকে।’ তিনি আরও লিখেছেন,’সাম্প্রতিক অতীতেও শুধুমাত্র নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপর অকথ্য নির্যাতন করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। আমাদের বহু সক্রিয় কর্মীর প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাও আরও একবার প্রমাণ করে দিল রাজ্যের জনবিচ্ছিন্ন, নৃশংস এবং রক্তপিপাসু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কতটা ভয় পেয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিকে। আমরা আমাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও রাজ্যের প্রতিটি বিজেপি কর্মীর সুরক্ষার জন্য লড়বো। রাজ্যকে বাঁচানোর সংকল্পে রক্তপিপাসু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে।’
শুধু সুকান্তবাবুই নন,পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও । তিনি এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেজে লিখেছেন,’মথুরাপুর লোকসভার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার কনভেনর পৃথ্বীরাজ নস্কর খুন হয়ে গেলেন। মৃতদেহ পাওয়া গেছে মন্দিরবাজারের বিজেপি পার্টি অফিসের ভিতরে। পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। পুলিশ কে জানিয়েও কিছু হয়নি। অথচ ওর ফোনের সিম দুটো চালু ছিল। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় একটা তরতাজা প্রাণ চলে গেলো। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে সন্ত্রাসের শাসন চলছে। বিজেপি কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মারা হচ্ছে। এবার দলীয় অফিসেই খুন। কোনরাজ্যে বাস করছি আমরা?এই খুনের সিবিআই তদন্ত চাই। তাহলে প্রকৃত অপরাধীরা ধরা পড়বে। জাস্টিস ফর পৃথ্বীরাজ ।’
জানা গেছে,উস্তির আটপাড়া এলাকায় থাকতেন পৃথ্বীরাজ নস্কর৷ ৫ দিন আগে হঠাৎ তিনি নিখোঁজ হয়ে যান । গত ৭ নভেম্বর ন্ধ্যায় উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার । তারপর দু’দিন তার ফোন চালু ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে । কিন্তু তাসত্ত্বেও পুলিশ তার সন্ধান করতে না পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । অবশেষে শুক্রবার রাতে সন্দেহের বশে পরিবারের লোকজনেরা বন্ধ পার্টি অফিসের জানালা দিয়ে উুঁকি দিয়ে দেখতেই রক্তে মাখা সাদা কাপড় জড়ানো অবস্থায় কিছু পড়ে দেখতে দেখে থানায় খবর দেয়। এরপর রাত প্রায় ১টা নাগাদ উস্তি থানার পুলিশ এসে তালা বন্ধ পার্টি অফিসের ভেতর থেকে বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে । ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।।