এইদিন ওয়েবডেস্ক,লখনউ,০৭ নভেম্বর : নিজের সম্প্রদায়ের কট্টরপন্থী মানসিকতায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন উত্তর প্রদেশের আম্বেদকর নগর জেলার বাসিন্দা নুরুনেহার ওরফে নূরী । ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলার মহারাজগঞ্জে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুর্গা বিসর্জনের মিছিলে ইসলামিক মৌলবাদীরা রাম গোপাল মিশ্র নামে এক যুবককে নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে যায় । এই খুনের ঘটনায় ব্যপকভাবে প্রভাবিত করে নুরিকে । নিজের সম্প্রদায়ের এই প্রকার কট্টরপন্থী মানসিকতা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি । শেষ পর্যন্ত তিনি ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু হয়েছেন । বাহরাইচ সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন যে এমন ধর্মে বসবাস করা উচিত নয় যে ধর্ম মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না।নূরী বলেছেন যে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে তার সবচেয়ে ভাল জিনিসটি হল এটিতে কোনও বৈষম্য নেই । এখানে সবাই সমান।
উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলার একটি মন্দিরে গিয়ে নিজেকে শুদ্ধিকরণ করে সনাতন ধর্মে ফিরে এসেছেন নূরী। এখন তিনি নিশা নামেই পরিচিত হবে। শুদ্ধিকরণ অনুষ্ঠানে তার পাশে ছিলেন প্রেমিক অখিলেশ । হিন্দু রীতি মেনে মন্দিরে মালাবদল করে প্রেমিককে বিয়ে করেন নুরী । বিয়ে উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় হিন্দু শের সেনার সদস্যরা।
২৩ বছর বয়সী নুরি মূলত ইউপির আম্বেদকর নগর জেলার বাসিন্দা। তার পিতার নাম মোহাম্মদ খলিল। নুরী লুধিয়ানার একটি কারখানায় কাজ করেন । দেড় বছর আগে, এখানেই ২৫ বছর বয়সী অখিলেশের সাথে তার পরিচয় হয়েছিল। অখিলেশ ইউপির সীতাপুরের বাসিন্দা । একই কারখানায় কাজ করার সময় দু’জনে প্রেমে পড়ে যান । এর পর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ভিন্ন ধর্মের কারণে পরিবারের সদস্যরা এই সম্পর্কে রাজি ছিলেন না। অখিলেশ কোনওমতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের বোঝান । কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি নূরীর পরিবার। উল্টো নূরীর ওপর অনেক ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ।
ওপইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় হিন্দু শের সেনার সভাপতি বিকাশ হিন্দু বলেছেন যে নূরী প্রথমে বিভ্রান্ত ছিলেন। বিয়ের পরও তিনি তার ধর্ম ছাড়তে চায়নি। এতে রাজি হন অখিলেশও। কিন্তু বাহরাইচের ঘটনার পর তার মন ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়। বিকাশ হিন্দু জানিয়েছেন, রামগোপাল মিশ্রের খুন নূরীকে নাড়া দিয়েছিল। স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। এরপর তিনি ইসলাম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হবার সিদ্ধান্ত নেন। অখিলেশকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানান নূরী। অখিলেশ বাহরাইচ সহিংসতার সময় রাষ্ট্রীয় হিন্দু শেরসেনাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রান্তদের হয়ে আওয়াজ তুলতে দেখেছিলেন। তিনি বিকাশ হিন্দুর সাথে কথা বলেন। এরপর সংস্থার সহায়তায় শিব মন্দিরে পূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দুজনের বিয়ে হয়।
শুদ্ধিকরণের পর নূরী ও অখিলেশ মালাবদল করেন । তারা উভয়েই যজ্ঞ করেন এবং হিন্দু দেব-দেবীর স্তুতি পাঠ করেন। নূরী মহাদেব, মা কালী এবং দুর্গার পূজাও করছেন। অখিলেশের পরিবার নিয়ে খুব খুশি নূরী । তিনি বলেছেন যে অখিলেশের পরিবার খুব ভাল এবং তার সম্পূর্ণ যত্ন নিচ্ছে।।
তথ্যসূত্র ও ছবি : সৌজন্যে ওপি ইন্ডিয়া ।