এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৭ নভেম্বর : আরজি কর কান্ডের পর রাজ্যে একের পর এক নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটে চলেছে । কোথাও কোথাও খোদ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরাই ওই সমস্ত কুকর্মে জড়িয়ে পড়ছে । আর এতে চরম অস্বস্তিতে আছে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস দল । এরই মাঝে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী রেখা পাত্রকে “মাল” বলে কটুক্তি করে অস্বস্তি বাড়ালেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । উপনির্বাচনে প্রচারে গিয়ে প্রকাশ্য মঞ্চে তিনি রেখা পাত্রকে “মাল” বলেই ক্ষান্ত থাকেননি, নিজের দেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম উচ্চারণ না করে “দাড়িওয়ালা” বলেও সম্বোধন করেছেন । তার এই সমস্ত বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির ওই নেতাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যের ভিডিও স্লিপিং এক্স-এ শেয়ার করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । ভিডিওতে ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা গেছে,কিছুদিন আগে সন্দেশখালি তো আমার একটা বন্ধু ছিল । তার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ক্যানিংয়ে । সেই বিয়ে ভেঙে দিল ছেলের বাড়ি । বলল না, সন্দেশখালি থেকে মেয়ে আনলে পাড়ার লোকেরা বলবে বোধ হয় এই মেয়ে পবিত্র নয় । বাপটা হাউ হাউ করে কাঁদছে…মা’টা হাউ হাউ করে কাঁদছে…পুরো এলাকার উপর এত বড় কলঙ্ক কে লাগিয়ে দিল ? বিজেপি লাগিয়ে দিল । আর ওখানে একটা দাড়িওয়ালা ইলেকশনের আগে এসেছিল মনে আছে ? মনে আছে আপনাদের ? কি নাম ? আরে নামটা বলেন না দাড়িওয়ালার …তার নাম হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী ৷ কাঁদছিলেন ।’ এর পর কান্নার নকল করে হাকিম বলেন,’মেরে সন্দেশখালির মা বহেন’…কি কান্না বাবা…কি কান্না । আপনাদের এখানে সন্দেশখালিতে প্রার্থী দিয়ে দিল… সেই ভদ্রমহিলা কোথায় ? এইতো হাজী নুরুলের বিরুদ্ধে কেস করেছিল… হেরে গিয়ে হেরো মাল…কয়েক লক্ষ ভোটে হেরে গেল…তারপরে কেস করলো । বিজেপি কেস জানে মা কিন্তু মানুষের পাশে আসতে জানে না ।’
ফিরহাদের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘স্পষ্টতই আপত্তিকর ! মমতা সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের শ্রীমতিকে অপমান করার কোনো অধিকার বা ক্ষমতা নেই। রেখা পাত্র. একজন মহিলাকে উল্লেখ করার সময় জঘন্য শব্দ ‘মাল’ উচ্চারণ করার জন্য তাকে কেবল কঠোরভাবে তিরস্কার করা উচিত নয় বরং একজন মহিলাকে বর্ণনা করার সময় এই ধরনের অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করার জন্য তাকে আইনি স্ক্যানারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।’
তিনি লিখেছেন,’শ্রীমতী রেখা পাত্র, একজন মহিলা হওয়া ছাড়া, এসসি পৌন্ড্র-ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। এটি কেবল তার প্রতিই নয়, তার সমগ্র সম্প্রদায়ের প্রতিও আপত্তিকর। এছাড়াও একজন ব্যক্তি যে একজন নারীর প্রতি ঘৃণাপূর্ণ হতে পারে, তার কাছ থেকে কি আর আশা করা যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্য, যেমনটি প্রায়শই তার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন ।’।