এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৪ নভেম্বর : তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছেন, শাসক দলের মুখিয়া রাজ্যের হিন্দিভাষী এবং বাংলাভাষীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন । আজ সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের লোহা পট্টিতে ছট পুজো উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেছেন, ‘আপনারা তো জানেন বাংলায় কি চলছে । বাংলার শাসক দলের যিনি প্রধান, তিনি হিন্দিভাষী লোকেদের ঘৃণা করেন। এই কারণে হিন্দিভাষী এবং বাংলাভাষী হিন্দুদের মধ্যে একটা প্রাচীর খাড়া করে দিতে চাইছেন । আমাদেরকে বিভাজন করতে চান উনি । এতে সনাতনী হিন্দু কমজোর হবে এবং ওনার যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সেটা সফল হবে ।’ তিনি বলেন, ‘এজন্য আপনাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আবেদন করব । বিশেষ করে সনাতনীদের ।’
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এর সেই প্রখ্যাত উক্তি ‘বাটেগা তো কাটে গা’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’এই কারণে গোরক্ষপুরের মহন্ত যোগী আদিত্যনাথ জি বিগত কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী দিনে বৃন্দাবনে একটা আওয়াজ তুলেছিলেন : ‘বাটেগা তো কাটে গা, এক রহেগা তো নেক রহেগা সেফ রাইগা’ । এই কারণে এখন বাংলাতেও নতুন দিনের সূচনা হয়ে গেছে । গণপতি উৎসব শুধু শুধু এখন মহারাষ্ট্রের নয়,এখন বাংলার প্রতিটা মহল্লাতে গণপতি উৎসব হচ্ছে । এটা এখন সনাতনের অনুষ্ঠান । আসন্ন ছট পুজোতেও বাঙ্গালী হিন্দুর অংশগ্রহণ করবেন। আজকে এই জায়গায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে । একদম বিভাজিত হবে না । কারণ বাটে গা তো কাটে গা । এই কারণে সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে এবং সনাতন সংস্কৃতিকে মজবুত করতে হবে।’ তিনি প্রায় একই কথা বলেন পরে হাওড়ার শিবপুরে “সনাতন সৈনিক”-এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গিয়ে ।
প্রসঙ্গত, বাংলা ভাষীদের মধ্যে হিন্দিভাষীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে রাজ্যের একটা ভুঁইফোড় সংগঠনের বিরুদ্ধে । কলকাতা থেকে পরিচালিত ওই সংগঠনের রাজ্য জুড়ে সদস্যরা ব্যাংক, সরকারি দপ্তরে গিয়ে হিন্দিভাষী কর্মীদের বাংলায় কথা বলার জন্য চাপ দিতে দেখা যায় প্রায়ই। এ নিয়ে তারা বিভিন্ন অফিস অফিসে ঘুরে রীতিমতো ঝামেলা পর্যন্ত পাকায় । সংগঠনের বিরুদ্ধে বাংলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতা গড়ে তোলার মত গুরুতর অভিযোগ ওঠে । মাস দুয়েক আগে শিলিগুড়িতে পরীক্ষা দিতে আসা দুই বিহারী ছাত্রের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করতে দেখা যায় ওই সংগঠনের সদস্যদের । বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে তুমুল বিতর্ক হলে সংগঠনের দুই পান্ডাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়।পুলিশ । সংগঠনটির প্রতি রাজ্যের শাসক দল নরম মানসিকতা পোষণ করে বলে অভিযোগ । কেউ কেউই সংগঠনকে তৃণমূল কংগ্রেসের সৃষ্টি বলেও মনে করেন ।।