এইদিন ওয়েবডেস্ক,কুমিল্লা,০১ নভেম্বর : জঙ্গি সংগঠনগুলির হাতে দেশের শাসন ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ চলে আসতেই পরধর্ম অসহিষ্ণুতা ও উগ্রপন্থার নিরিখে পাকিস্তানি মুসলিমদের টেক্কা দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের জিহাদি মুসলিমরা । শারদোৎসবের সময় থেকে শুরু করে লক্ষ্মীপূজো পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতিমা ভাঙচুরের প্রচুর নজির প্রকাশ্যে এসেছিল । বাদ গেল না কালীপূজাতেও । বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের কুমিল্লার একটা মণ্ডপে কালী প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় একটা ৬ তলা আবাসিক ভবন থেকে গরম জল ও ইঁটপাটকেল ছুড়েছে মুসলিম মহিলা ও পুরুষরা । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । ক্ষিপ্ত হিন্দুরা দেবী প্রতিমা দাঁড় করিয়ে রেখে ওই আবাসিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ । কিন্তু আজ শুক্রবার পর্যন্ত কোনো গ্রেফতারির খবর নেই ।
জানা গেছে,বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা শহরের রাজেশ্বরী কালীবাড়ি থেকে কালী প্রতিমা একটা ভ্যানে চাপিয়ে রাণীবাজার সাহাপাড়া পূজা মন্ডপে নিয়ে যাচ্ছিলেন পূজো উদ্যোক্তারা । কিন্তু ভ্যানটি প্রতিমা নিয়ে নগরীর তালপুকুর পাড় এলাকায় একটা ৬ তলা আবাসিক ভবনের সামনে দিয়ে আসতেই ভবনের মুসলিম জিহাদি পুরুষ ও মহিলারা প্রতিমা ও সঙ্গে থাকা লোকজনের উপর গরম জল ছুড়তে শুরু করে । পাশাপাশি তারা দেদার ইঁটপাটকেল ছুড়তে থাকে । পূজো কমিটির লোকজন কোনো রকমে প্রতিমাকে বাঁচিয়ে নিরাপদ স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখে । তারপর ওই ভবনের সামনে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ।
প্রসঙ্গত,বাংলাদেশের মুসলিমদের সাম্প্রদায়িক মানসিকতা নতুন কোনো ঘটনা নয় । বিশেষ করে হিন্দুদের মন্দির ও দেবদেবীদের বিগ্রহ নিশানায় থাকে বাংলাদেশের জিহাদিদের । ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়াদিঘির পাড়ে দর্পণ সংঘের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে কোরানের একটা কপি রেখে তার ছবি ভাইরাল করে দিয়ে দাঙ্গা বাধিয়েছিল ইকবাল হোসেন নামে এক ইসলামি সন্ত্রাসবাদী । ওইদিন নগরীর চারটি মন্দির ও সাতটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া মুসলিমদের হাতে খুন হতে হয়েছিল দিলিপ দাসসহ বেশ কয়েকজন হিন্দুকে । ধর্ষিতা হয়েছিল বেশ কয়েকজন হিন্দু নারী । বাড়িঘর, দোকানপাট ও মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় ।
২০২১ সালের ১৩ অক্টোবরের ঘটনার পর কুমিল্লায় বিভিন্ন থানায় মোট ১২টি মামলা দায়ের হয়েছিল। এরমধ্যে ছয়টি মামলা অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছিল সিআইডি। বাকি চারটি মামলায় ৯৯ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করা করা হয় । সেই ঘটনায় কুমিল্লা নগরীর লস্করপুকুর এলাকার নুর আহমেদ ও আমেনা বেগমের ছেলে ইকবাল হোসেনসহ মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয় । কিন্তু ইকবাল হোসেনকে পাগল সাজিয়ে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ।।