এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,৩১ অক্টোবর : হিন্দুদের অধিকার রক্ষায় দাবি তোলা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৮ জন হিন্দুর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীরা মামলা করেছে বাংলাদেশের জিহাদিরা ৷ একটি ভিডিও বার্তায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেছেন, ‘জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় আমার বিরুদ্ধে একটা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে । সেই মামলায় আমি ছাড়াও ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে ।’ তিনি বলেছেন,’গত পাঁচই আগস্টের পরে সনাতনীদের ওপর অবর্ণনীয় অত্যাচারের প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা আনার দাবিতে আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম । আট দফা দাবিতে আমরা এই আন্দোলন সুশৃংখলভাবে চালিয়েচ্ছি ।’ কিন্তু শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনের পরেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেছেন৷ মামলা করার প্রতিবাদে এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ বুধবার চট্টগ্রামের চেরাপী মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং মানব বন্ধনের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে চট্রগ্রামের লালদীঘি ময়দানে হিন্দু গনজাগরণ মঞ্চের ডাকে বিশাল সমাবেশ হয় । প্রায় ২ লাখ সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষ উপস্থিত হয়েছিল ওই সমাবেশে ! এই সমাবেশটা হয়েছিল মূলত হিন্দুদের ৮ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবিতে । কিন্তু মোহম্মদ ফিরোজ খান,খাদিজা বেগম,স্বরূপ খান চৌধুরী প্রভৃতি জিহাদিরা মিলে চট্টগ্রামের সিএমসির কোতোয়ালি থানায় ১৯ জন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ তুলে একটা মামলা রজু করেছে ।
মামলায় তারা আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে ‘সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী’ বলে অবিহিত করে বলেছে,আন্দোলনকারীরা দেশের জাতীয় পতাকা খুলে গেরুয়া পতাকা লাগিয়েছিল । যাকে তারা ‘স্বাধীন রাষ্ট্রের অখন্ডতাকে অস্বীকার করার সামিল’ বলে মন্তব্য করেছে । ইসলামি জিহাদিরা লিখেছে,’বর্ণিত আসামীরা তাহাদের সংঘটনের নেতৃবৃন্দের সহিত পরস্পর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপর তাহাদের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে দেশের ভিতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার তথা রাষ্ট্রদোহ কর্মে লিপ্ত হয়েছে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে শ্রেণী বিদ্বেষের জন্ম হয়েছে এবং ব্য্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় ০১ নং হতে ০৯ নং আসামীদের ইন্ধনে ১০ নং হতে ১৯ নং আসামীরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন আসামী একই উদ্দেশ্য সাধনকল্পে পরস্পর যোগসাজসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে নাগরিকদের মধ্যে শ্রেণী বিদ্বেষ ছড়িয়ে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ও রাষ্ট্রদোহীতার অপরাধ করেছে। আমি ঘটনার বিষয়ে আমার আশ-পাশের লোকজন ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আসামীদের নাম-ঠিকানা, ছবি ও তথ্য সংগ্রহের করে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।’
প্রসঙ্গত,কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে গত ৫ আগস্ট প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছিল জামাত ইসলামি ও বিএনপির মত ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলি । মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকার প্রথমেই কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের কারাগার থেকে মুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে রজু হওয়া যাবতীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় । এটা জিহাদিদের কাছে রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয় । বিএনপির সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে যাবতীয় দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করা হয় এবং তাকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় । বাংলাদেশের জিহাদিরা এই ঘটনাকেও স্বাভাবিকভাবে নেয় । শুধু তাইই নয়, একজন অমুসলিমের লেখা জাতীয় সঙ্গীত ও নক্সা করা জাতীয় পতাকা বাতিলের দাবিতে জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকার অববাননা করতে শুরু করে ইসলামি জঙ্গিরা । তখনও এই ঘটনাকে ফিরোজ খান,খাদিজা বেগমের মত জিহাদিদের মনে হয়নি যে তাদের সম্প্রদায়ের লোকজনদের ওই সমস্ত কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রদোহীরার সামিল । আসলে হিন্দুদের আন্দোলন থামাতে বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে তদারকি সরকারের একটা ষড়যন্ত্রের অঙ্গ হিসাবে এই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাকে দেখছে সেদেশের হিন্দুরা ।।