এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩০ অক্টোবর : মুসলিম অধ্যুষিত কলকাতার গার্ডেনরিচের একটি পুজো মণ্ডপে ঢাক ও মাইক বাজানোর অছিলায় পূজো পন্ড করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় ‘জিহাদিদের’ বিরুদ্ধে । দুর্গাপুজোয় অষ্টমীর বিকেলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হামলার মুহুর্তের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন ।পুজো কমিটির তরফে গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল । কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে গড়ায় । সেই মামলায় রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে রিপোর্ট তলব করেছে উচ্চ আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সেই সংক্রান্ত মামলাতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে দুর্গা পুজোর সময় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কতগুলি হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে তা আদালতে জানাতে বলেছেন মহামান্য বিচারপতি । আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য,এবারের দুর্গাপূজা ও লক্ষ্মীপূজার সময় রাজ্যের একাধিক জায়গায় মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটেছিল । গার্ডেনরিচ ছাড়াও কোচবিহার, হাওড়া, নদিয়া জেলাতে পূজো মণ্ডপে জিহাদি হামলার ঘটনা ঘটে । মহাষ্টমীর দিন কলকাতার গার্ডেনরিচের একটা পুজো মণ্ডপে ঢাক ও মাইক বাজানোর জন্য হামলার ঘটনা ঘটে । এরপর হাওড়া জেলার শ্যামপুর এলাকায় একটা পুজো প্যান্ডেলে হামলা হয় ইসলামের নবীর ছবি আঁকার অপরাধে । এই সময়ে দেবী দুর্গার মূর্তিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ।
রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই প্রসঙ্গে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট লিখেছেন । তিনি বললেন,’শ্যামপুর থানা থেকে ফেরার সময়, একদল দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালায় এবং দুর্গাপূজা প্যান্ডেল ভাঙচুর শুরু করে। তারা শ্যামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পূজা প্যান্ডেলে প্রতিমাতে আগুন দেয় এবং অন্যান্য প্যান্ডেলও ভাঙচুর করে। তাদের মধ্যে কিছু পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ জেলার শ্যামপুর থানার অন্তর্গত এলাকায়। শুভেন্দু অধিকারী পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান ।
কলকাতার গার্ডেনরিচ এবং হাওড়ার শ্যামপুরে দুর্গাপূজার সময় হামলার পর লক্ষ্মীপূজোতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ বিধানসভার বাওয়ালি রথতলা পুজো কমিটির মা লক্ষ্মীর প্রতিমা জেহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত হয় । অপবিত্র করা প্রতিমা নিয়ে পুলিশের সামনে হিন্দুদের বিক্ষোভের ভিডিও এক্স-এ শেয়ার করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লিখেছিলেন, ‘লক্ষ্মী পুজোয় ডায়মন্ড হারবার মডেল:-কলকাতার গার্ডেনরিচ, হাওড়ার শ্যামপুরের পর এবার ডায়মন্ড হারবার, হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাসের উপর আঘাত এখনো অব্যাহত এই রাজ্যে।এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ বিধানসভার বাওয়ালি রথতলা পুজো কমিটির মা লক্ষ্মীর প্রতিমা জেহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত হল। বাংলাদেশের মত একই পদ্ধতিতে এখন পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের ধর্মাচরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য পুলিশ নির্বিকার।কয়েকবছর আগে এই একই জায়গায় দুর্গাপুজোয় মা দুর্গার মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় আজ পর্যন্ত প্রশাসন কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, কেউ গ্রেফতার হয়নি। মমতা ব্যানার্জি সরকারের তোষণের রাজনীতির জন্য হিন্দুদের উপরে ক্রমাগত ঘটে চলা এই অন্যায় অত্যাচারের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। হিন্দুদের বলবো এবার জাগ্রত হন, নাহলে এরপর নিজের ঘরেও পুজো-আচ্চা করতে পারবেন না।’ পরে এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। গার্ডেনরিচের হামলার ঘটনার তদন্তভার এনআইএকে দেওয়ার দাবি জানায় ওই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি ৷।