এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু-কাশ্মীর,৩০ অক্টোবর : পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী নিয়ন্ত্রণ রেখায় জম্মু -কাশ্মীরের আখনুর সেক্টরের কেরি ব্যাটালে প্রায় ২৭ ঘন্টা ধরে নিরাপত্তা বাহিনী এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। সন্ত্রাসীরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্স আক্রমণ করেছিল । এতে সেনারা তিন সন্ত্রাসীকে খতম করে। সন্ত্রাসীরা বটতলার প্রাচীন শিব মন্দিরে অনুপ্রবেশ করে লুকিয়েছিল। এনকাউন্টারের সময় শিব আসান মন্দিরটি খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তবে সেখানে মন্দিরের প্রাচীন শিবলিঙ্গ যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেছে, সন্ত্রাসীরা কোনো ক্ষতি করতে পারেনি । এনকাউন্টারটি হয় গত ২৮ অক্টোবর ।নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ থেকে বোঝা যায় যে তারা দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নিয়েছিল।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী কেরি বাটাল এলাকায় এই এনকাউন্টার হয়েছে। এই এলাকায় একটি শিব আসন মন্দির রয়েছে যেটি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এই মন্দিরটিকে সৈন্যদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এখানে সৈন্যরা প্রায়ই পূজা ও ভোগ বিতরণ করে থাকে। ২৮ অক্টোবর অ্যাম্বুলেন্সে গুলি চালানোর পর এই মন্দিরে ঢুকে পড়ে সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তা বাহিনী মন্দিরটিকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে অভিযান চালায়।
গোলাগুলিতে মন্দিরের কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু এত গুলিবর্ষণের পরও মন্দিরের শিবলিঙ্গ অক্ষত রয়েছে। মন্দিরের ওপরের জলের ট্যাংকটিও অক্ষত রয়েছে। এখন মন্দির কমিটি ও সেনাবাহিনী মিলে এই মন্দিরটি আবার সংস্কার করবে। মন্দিরে অনুষ্ঠিত সকল অনুষ্ঠানও চলবে আগের মতোই। গ্রামবাসীরা এটিকে মন্দিরের গৌরব এবং ভগবান শিবের কৃপাকে দায়ী করেছেন যে এত দীর্ঘ লড়াই সত্ত্বেও সমস্ত সৈন্যরা নিরাপদে ছিল।
আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। তাদের কাছে এম-৪ কারবাইন এবং একে-৪৭ রাইফেলের মতো মারাত্মক ও অত্যাধুনিক অস্ত্র ছিল। খাদ্য সামগ্রীও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্যান্ডি, কিশমিশ, কাজুবাদাম, খেজুর, ছোলার প্যাকেট এবং মধুর বোতল। অন্যান্য অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি পিস্তল, ৩ টি এম-৪ ম্যাগাজিন,একে-৪৭ এর ৪ টি ম্যাগাজিন, ৯ এমএম পিস্তলের ২০ রাউন্ড,৭.৬২ এমএম-এর ৭৭ রাউন্ড, ৫.৬ এমএম-এর ১২৯ রাউন্ড, ১ টি হ্যান্ড গ্রেনেড,১ টি সাইলেন্সার এবং ৩ টি ছুরি।
সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ১টি ডিজিটাল ঘড়ি, ১টি লাল রঙের নোটবুক, ১টি বাইনোকুলার, ১টি পাওয়ার ব্যাংক, ১টি সোলার প্যানেল, জামাকাপড়, জুতা, মোজা ও কম্বল। সামরিক কর্মকর্তাদের ধারণা, সন্ত্রাসীরা ওই এলাকা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত ছিল। এই অভিযানে বিশেষ বাহিনী ছাড়াও এনএসজি কমান্ডোদেরও মোতায়েন করা হয়েছিল।।