এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১৩ জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের লাখুড়িয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অসীম দাস(৫২) সোমবার সন্ধ্যায় খুন হওয়ার পর মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এল সিআইডি । এদিন দুপুরে নাগাদ সিউর গ্রামে আসে সিআইডির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল । তাঁরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন । সেই সঙ্গে নিহতের পরিবার ও কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গেও তাঁদের কথা বলতে দেখা যায় । যদিও এখনও পর্যন্ত তদন্তভার রয়েছে রাজ্য পুলিশের হাতেই । পুলিশ এই খুনের ঘটনায় পাঁচজনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে সুত্রের খবর । তবে এদিন বিকেল পর্যন্ত খুনের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ ।
এদিকে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে এদিন সকালে গতিষ্ঠা বাসস্ট্যান্ডের কাছে নতুনহাট গুসকরা রাজ্য সড়ক পথ অবরোধ শুরু করে
তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা । খবর পেয়ে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ আসে । শেষে পুলিশের আশ্বাসে ঘন্টাখানেক পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয় ।
সোমবার সন্ধ্যায় খুন হন মঙ্গলকোট থানার সিউর গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা অসীম দাস । তিনি কাসেমনগর বাজার থেকে বাইকে চড়ে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে রাস্তায় আটকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিরা । এদিন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের সময় মৃতদেহ থেকে একটি গুলি উদ্ধার করেন চিকিৎসকরা । পুলিশ গুলিটি সিজ করেছে । প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতিরা ওয়ান সার্টার পিস্তল ব্যাবহার করেছিল । পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে অসীমবাবুর বুকে তারা ওই একটি গুলিই করেছিল ।
এদিকে খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে শাসকদল নেতৃত্ব । যদিও এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন খোদ মৃতের পরিবার ৷ তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি নয় বরঞ্চ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরাই অসীমবাবুকে খুন করেছে । মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের কাছে এনিয়ে মুখ খুলেছেন মৃতের বড়দিদি তাপসী সরকার । তিন দাবি করেন, ‘আমার ভাইকে অঞ্চল সভাপতির পদে মানতে পারছিল না দলের একাংশ । তৃণমূলের দুস্কৃতীরাই ভাইকে খুন করেছে । আমাদের দাবি, উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক ।’ যদিও দলীয় নেতা খুনের ঘটনায় এদিন ফের বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছেন মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী । তাঁর অভিযোগ, ‘বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই খুন করেছে ।’
এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়তা ছিল মৃত তৃণমূল নেতা অসীম দাসের । মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ যখন ময়নাতদন্তের পর মরদেহ সিউর গ্রামে নিয়ে আসা হয় তখন কাতারে কাতারে মানুষ এসে ভিড় জমান । মৃতদেহ দেখার পর পরিবার পরিজন ছাড়াও বহু মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন । আসেন মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী সহ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক নেতৃত্ব । পরে গ্রামের শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করা হয় । জনপ্রিয় ওই তৃণমূল নেতার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা ।।