বানা রায়, বর্ধমান, ২৬ অক্টোবর: ‘গুলু’র মোমো হাতসাফাই করে পালালেন কোন মূর্তিমান? তারই চর্চা শুরু হয়েছে নেট দুনিয়ায়। আর পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড়ের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা কুশল ঘোষ ওরফে গুলু সেই ‘মোমো চোর’ এর পরিচয় জানার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। বাইকের হ্যাণ্ডেলে ঝুলিয়ে রাখা ৭০ টাকার মোমোর প্যাকেটটি হাতিয়ে নিয়ে কিভাবে ‘ভদ্রলোক’ চোর বাইকে চড়ে চম্পট দিলেন তা ধরাও পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে । আর সেই ফুটেজের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন কুশলবাবু। তবে মোমো ফেরত পেতে নয়, ওই ‘মোমো প্রেমী’ চোরকে পেলে কুশলবাবু তাঁকে পেট ভরে মোমো খাওয়াতে চান। ঘটনাটি কি? বর্ধমানে এদিন শুক্রবার থেকে ৪২ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে(যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এইদিন)। তাতে দেখা যাচ্ছে বর্ধমান শহরে ভরা বাজারে একটি মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা বাইকের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে রাখা একটি প্যাকেট সুযোগ বুঝে খুব সন্তর্পনে হাতসাফাই করে পালিয়ে গেলেন আর এক বাইকচালক। পড়নে তাঁর জিন্সের প্যান্ট, টিশার্ট। মাথায় হেলমেট। তবে মুখটা দেখা যাচ্ছে। ওই দোকান থেকে বেড়িয়ে এসে নিজের বাইকের কাছে গিয়ে আবার পিছিয়ে এসে অন্য একটি বাইকের হ্যাণ্ডেলে ঝোলানো ওই প্যাকেটটি নিয়ে আর দেরি না করে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে গেলেন।
জানা যায় যিনি এই ভিডিও প্রথম সামাজিক মাধ্যমে পোষ্ট করেন তিনিই ওই প্যাকেটটির আসল মালিক। তিনি শক্তিগড়ের বাসিন্দা। নাম কুশল ঘোষ ওরফ গুলু। জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি বর্ধমান শহরের কালীবাজারে জি টি রোডের ধারে একটি ফাস্টফুডের দোকান থেকে এক প্লেট মোমো কিনে পার্সেল করান। বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য। মোমোর দাম পড়েছিল ৭০ টাকা। বাড়ি ফিরে আসার পথে গুলুবাবুর মনে পড়ে বাড়ির জন্য মিষ্টিও কিনতে হবে। বাইকে চড়ে ততক্ষণে সদরঘাটের কাছাকাছি বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ে চলে এসেছেন। সেখানে একটি মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়ান। দোকানের সামনে বাইক রেখে মিষ্টি কিনতে ঢোকেন। মিষ্টি কিনে দাম মেটাতে যতক্ষণ।ওইটুকু সময়ের মধ্যে গুলুবাবুর মোমোর প্যাকেট বেহাত হয়ে যায়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি দোকান মালিককে বলেন। মিষ্টির দোকানের মালিকেরও খুব খারাপ লাগে। কারণ তাঁর দোকানের সামনে থেকেই এই চুরি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয় । আর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজেই ধরা পড়ে যায় মোমো চুরির দৃশ্য।
এখানেই শেষ নয়, গুলুবাবুর চুরির দৃশ্য দেখে মিষ্টির দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের হুঁশ ফেরে। ওই অচেনা ব্যক্তিই ওই মিষ্টির দোকান থেকে তার আগেই মিষ্টি কিনে নিয়ে যায়। ফের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায় শুধুমাত্র মোমো চুরি নয়, মিষ্টি কিনে তারও দাম দেয়নি মূর্তিমান মোমো চোর।
তবে এনিয়ে এদিন শুক্রবার পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি। কুশলবাবু বলেন,”আমি অভিযোগ করতে চাই না। তবে ওর পরিচয় জানার খুব ইচ্ছা হচ্ছে। ওনার সঙ্গে দেখা হলে আমি নিজেই ওনাকে পেট ভরে মোমো খাওয়াবো। আর মিষ্টির দোকানের মালিকের আক্ষেপ,” বাপরে! এমন হ্যাংলা চোর দেখিনি ।”।