এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভুবনেশ্বর,২৫ অক্টোবর : ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আছড়ে পড়েছে ওড়িশার উপকূলে । আজ সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় প্রবল বাতাস ও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ওড়িশায় আকস্মিক বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানার প্রেক্ষিতে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে প্রায় ৪০০০ শিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিভিন্ন ফ্লাইট পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে ২০০ টিরও বেশি রেল পরিষেবা। উভয় রাজ্যেই বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে শুক্রবার ওড়িশার কিছু জেলায় অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে, যা ধীরে ধীরে গভীর নিম্নচাপে দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) তার মধ্যাহ্ন বুলেটিনে জানিয়েছে, আগামী ৩ ঘন্টার মধ্যে ভদ্রক এবং বালাসোর জেলার নিম্নাঞ্চলীয় এলাকাগুলিকে ১ মিটার পর্যন্ত জলে প্লাবিত করতে পারে। এটি বালাসোর, ভদ্রক, ময়ূরভঞ্জ এবং কেওনঝার জেলার জন্য বিচ্ছিন্ন ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ২০ সেমি) বিচ্ছিন্ন অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের ( নুন্যতম ২০ সেমি) লাল সতর্কতাও জারি করেছে ৷ জাজপুর, কেন্দ্রপাদা, ঢেঙ্কানাল, কটকের বিচ্ছিন্ন স্থানেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত (৭ থেকে ২০সেমি) হতে পারে । ২৬ অক্টোবর সকাল ৮:৩০ টা পর্যন্ত আঙ্গুল, জগৎসিংহপুর, খুরদা, নয়াগড় এবং পুরী জেলার বিচ্ছিন্ন জায়গাগুলির জন্য ভারী বৃষ্টিপাতের (৭ থেকে ১১ সেমি) হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বালাসোর এবং ময়ূরভঞ্জ জেলার বিচ্ছিন্ন জায়গাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের হলুদ সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।
আবহাওয়া সংস্থা আরও বলেছে যে বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝার, ভদ্রক এবং কেন্দ্রপাদা জেলাগুলিতে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার থেকে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং তারপরে হ্রাস পাবে। এই সময়ের মধ্যে জগৎসিংপুর, কটক, ঢেনকানাল, আঙ্গুল এবং সুন্দরগড় ও খুরদা জেলার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৪০-৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আজ ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্রের প্রবল ঢেউ উঠবে এবং তারপরে ধীরে ধীরে উন্নতি হতে পারে। মৎস্যজীবীদের আজ পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং ওড়িশার উপকূলে এবং তার বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।ওড়িশার ধামরা বন্দরে লোয়ার গ্রেট ডেঞ্জার সিঙ্গার ১০ ও ডেঞ্জার সিগন্যাল ৭ এবং পারাদ্বীপ বন্দরে লোয়ার গ্রেট ডেঞ্জার সিঙ্গার ১০ ও ডেঞ্জার সিগন্যাল ৫ এবং পুরী ও গোপালপুর বন্দরে স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় দানা ভোর ১:৩০ থেকে ৩:৩০ টার সময় হারালিখাটি নেচার ক্যাম্প এবং ধামরার কাছাকাছি উত্তর ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করেছে এবং ঘন্টায় ১০০-১২০ কিমি বেগে বাতাসের গতিবেগ সহ একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসাবে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের চারপাশে সর্বাধিক স্থায়ী বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রায় ঘন্টায় ৪০ কিলোমিটার থেকে ১০০ কিমি পর্যন্ত। ভদ্রকের প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং ধামরা থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে ঝড়ের সাথে সকাল ৮:৩০ নাগাদ ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল।।