দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২১ অক্টোবর : বছর ১৪ আগে বিয়ে হয়েছিল । স্বামী ও দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে সংসার । পরিবারে তেমন স্বাচ্ছন্দ না থাকলেও বিশেষ অশান্তি কিছু হত না । কিন্তু কর্মসূত্রে স্বামীকে দিনভর বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। সন্তানরাও স্কুলে যেত । একাকী বাড়িতে থাকতে থাকতে বছর আঠাশের প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ৩২ বছরের বধূ । প্রেমিকের সঙ্গে নতুন সংসার গড়ার পরিকল্পনাও করে ফেলেছিলেন তিনি । সেই লক্ষ্যে নিজের যা কিছু সোনার গহনা ও বাড়িতে রাখা স্বামীর যাবতীয় টাকাপয়সা নিয়ে বেড়িয়েও আসেন তিনি । কিন্তু শেষ মুহুর্তে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে দেয় প্রেমিক । বধূকে এলোপাথাড়ি ক্ষুর চালিয়ে গুরুতর জখম করে সর্বস্ব নিয়ে চম্পট দেয় সে । এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার সকালে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার কামারপাড়া গ্রামে । পরে স্থানীয় বাসিন্দারা বধূকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে । যদিও জখম মহিলার কাছে হামলাকারীর নাম জানতে পরে ঘটনার আধ ঘন্টার মধ্যেই তার প্রেমিক সুচাঁদ প্রামাণিককে পাকড়াও করে পুলিশ । উদ্ধার হয়েছে বধূর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া গহনা ও টাকার ব্যাগ । পাশাপাশি গুনধর প্রেমিকের মোটরসাইকেলটি আটক করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,জখম বধূ ছন্দা খাঁয়ের স্বামী ভাতারের ওড়গ্রামে একটি গোডাউনে কাজ করেন । সকালে বেড়িয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন । তাদের দুই সন্তান রয়েছে । তারা স্কুল পড়ুয়া । বধূদের প্রতিবেশী অবিবাহিত সুচাঁদ প্রামাণিক । বেশ কিছুদিন ধরেই ছন্দা ও সুচাঁদের প্রেম চলছিল । অনান্য দিনের মত আজ সকালেও ছেলেদের স্কুলে পৌঁছে দিতে যান বধূ । সেই সময় যাবতীয় গহনা ও টাকাপয়সা একটা ব্যাগে ভরে সঙ্গে নিয়ে আসেন । ছেলেদের স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই ব্যাগ নিয়ে তিনি কামারপাড়া বাজারের সাহাপাড়া এলাকায় রাধারাণী মুক্তমঞ্চের কাছে চলে আসেন । সেখানে আগে থেকেই বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিল সুচাঁদ প্রামাণিক । কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে পোশাকের ব্যাগ আনতে ভুলে যান বধূ । জখম বধূ জানিয়েছেন যে একারণে তার প্রেমিক ঝামেলা করে । তাদের মধ্যে বচসাও হয়। তিনি ফের ব্যাগ আনার জন্য বাড়ি যাওয়ার কথা বলতেই তার প্রেমিক প্যান্টের পকেট থেকে একটা ক্ষুর বের করে তার উপর এলোপাথাড়ি চালাতে শুরু করে । তিনি প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালিয়ে গেলে তার সঙ্গে থাকা সোনাদানা ও টাকাপয়সা বগলদাবা করে সে বাইকে চড়ে পালিয়ে যায় ।
জানা গেছে,ছন্দাদেবী প্রেমিকেত হামলা থেকে বাঁচার জন্য রক্তাক্তবস্থায় পাশের একটি বাড়ির দরজায় প্রথমে ধাক্কা দেন । কিন্তু ওই বাড়িতে তখন লোকজন ছিলেন না। এরপর কোনওরকমে তিনি মুক্তমঞ্চের সামনে মাঠে এসে লুটিয়ে পড়েন । কয়েকজন চিৎকার শুনে মুক্তমঞ্চের সামনে এসে জড়ো হয় । তারাও বধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে । স্থানীয় বাসিন্দা মিঠুন মিস্ত্রি জানান,ছন্দা খাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তিনি জানান সে সুচাঁদের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি । বর্তমানে গুরুতর জখম অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই বধূ ।।
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের জটলা । ভাতার ।