ভারতকে আনুষ্ঠানিক স্বাধীন ঘোষণার আগে নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোসকে দেশ ছাড়া করা থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পর এমন অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তিদের মৃত্যু হয়েছে যা আজও প্রহেলিকা হয়ে আছে । লালবাহাদুর শাস্ত্রী থেকে শুরু করে মাধবরাও সিন্ধিয়া, রাজেশ পাইলট,জ্ঞানী জৈল সিং প্রমুখ প্রখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মৃত্যুর রহস্য আজও উদঘাটন হয়নি । শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নয়, ডক্টর হোমি জাহাঙ্গীর ভাবার সঙ্গে এমন ২৫০০ জনেরও বেশি ইসরো এবং ডিআরডিও বিজ্ঞানী এবং শীর্ষ প্রকৌশলীকে অত্যন্ত সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে হত্যা করা হয়েছিল । যার কোনো তদন্তই হয়নি । তবে একটা চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান হল যে সোনিয়া গান্ধী পুত্রবধূ হয়ে আসার পর থেকে গান্ধী পরিবারের একজনেরও স্বাভাবিক মৃত্যুর সুযোগ হয়নি…প্রত্যেকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে । আসুন জেনে নেওয়া যাক স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের এমন কিন্তু রহস্যজনক মৃত্যু বা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে :
প্রথমেই তিনটি পুরনো ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিতে চাই । জ্ঞানী জৈল সিং ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। তার জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ছিল। তিনি দিল্লিতে ঘোষণা করেছিলেন,’আগামীকাল আমি চণ্ডীগড়ে পৌঁছে বোফর্সের সমস্ত গোপনীয়তা প্রকাশ করতে যাচ্ছি।’ আর যেটা হল… দিল্লি-চণ্ডীগড় রোডে, সামনে থেকে একটা ট্রাক গর্জন করতে করতে এসে জ্ঞানী জৈল সিংয়ের গাড়িকে পিষে দিল। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। কোনো তদন্ত করা হয়নি।
দ্বিতীয় ঘটনায় কংগ্রেস নেতার পরামর্শে কান দেননি রাজেশ পাইলট। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘আগামীকাল … আমি কংগ্রেস সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেব।’ এরপর যা হলো, সামনে থেকে একটি বাস এসে তাকে পিষে দিল সেখানেই মৃত্যু হল তার । কোনো তদন্ত করা হয়নি। এই দুটি ঘটনার মোডাস অপারেন্ডি ছিল একই। তৃতীয় ঘটনায় অপারেন্ডির পদ্ধতি ছিল ভিন্ন।
মাধবরাও শিন্ডে (সিন্ধিয়া) সেই সময়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কঠোর পরিশ্রমী নেতা ছিলেন। তিনি টানা নবমবার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং লোকসভায় বিরোধী দলের নেতাও ছিলেন। এক কংগ্রেস নেতা উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে বলেছিলেন,’আমি প্রচার করতে আসছি!’ রাজ্য সভাপতি ছিলেন নির্ভীক । তিনি বললেন,’আসবেন না… মাধবরাওকে পাঠান। শুধু তিনিই ভোট টানতে পারেন।’ তারপর কি হল ? মাধবরাও সিন্ধিয়াকে বলা হয়েছিল যে আপনি আপনার ব্যক্তিগত বিমানে যাবেন না, এই নির্দিষ্ট বিমানে যাবেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক বিবৃতি দিয়েছিলেন,’প্রথমে বিমানে বোমা বিস্ফোরিত হয়, তারপর আগুন লাগে… বিমানে থাকা আটজনই নিহত হন ৷ কিন্তু কোনো তদন্ত করা হয়নি। কিছুক্ষণ পর কংগ্রেস রাজ্য সভাপতিকেও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় (সৌজন্যে: ডাঃ ঈশ্বরচন্দ্র করকারের কলম থেকে) ।
একইভাবে,১৯৬৫ সালের যুদ্ধের বিজয়ী, প্রধানমন্ত্রী শ্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী,ডক্টর হোমি জাহাঙ্গীর ভাবার সঙ্গে ২৫০০ জনেরও বেশি… ইসরো এবং ডিআরডিও বিজ্ঞানী এবং শীর্ষ প্রকৌশলীকে অত্যন্ত সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে হত্যা করা হয়েছিল । যেগুলির তদন্তও করা হয়নি । যে প্রবনতা ২০১৪ সালে বিজেপি আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷
এবার আসা যাক ইতালিয়ান আন্তোনিয়া আলবিনা মাইনোর সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধী ও ফিরোজ গান্ধী খানের জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজীবের বিবাহের পরবর্তী ঘটনাক্রম প্রসঙ্গে : রাজীব গান্ধী তার সমগ্র জীবনে মোট ১৮১ টি জনসভা করেছিলেন। তার মধ্যে ১৮০ টি জনসভায় সোনিয়া গান্ধীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন, কিন্তু ১৮১ তম জনসভায় তিনি সেদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন না…আর সেটাই ছিল রাজীব গান্ধীর জীবনের শেষ জনসভা ।
রাজীব গান্ধীর হত্যার সময় ১৪ জন মারা গিয়েছিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই ১৪ জনের মধ্যে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে একজনও কংগ্রেস নেতা ছিলেন না, যারা মারা গেছেন তারা সবাই সাধারণ মানুষ। এটা কি করে সম্ভব যে দেশের প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় সঙ্গে কংগ্রেসের একজন বড় নেতাও নেই ? কোন বড় বা ছোট কংগ্রেস নেতা রাজীব গান্ধীর সাথে মারা যাননি, এমনকি সোনিয়া গান্ধীও নয়, যিনি রাজীব গান্ধীর সাথে প্রতিটি মিটিংয়ে যেতেন। ভাবার বিষয় যে ওই দিন হোটেলেই ছিলেন সোনিয়া, এটাই সরকারি বিবৃতি।তাই সবাই জানত কি ঘটতে চলেছে এবং এইভাবে সমগ্র কংগ্রেসকে বিদেশীদের দ্বারা হাইজ্যাক করা হয়েছিল বলে সন্দেহ করা হয় । পরে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী নিজেই তার বাবার খুনিকে ক্ষমা করার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন ।
তবে এটা চিন্তার বিষয় যে যখন থেকে সোনিয়া এই পরিবারের পুত্রবধূ হয়ে এসেছেন, আজ পর্যন্ত এই গান্ধী পরিবারের একজনও মৃত্যু পর্যন্ত স্বাভাবিক মৃত্যুর সুযোগ পাননি, সকলেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর শ্বশুর কর্নেল আনন্দকে তার নিজের খামার বাড়ি থেকে অল্প দূরত্বে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয় গান্ধী মারা যান। ইন্দিরা গান্ধী নিজের দেহরক্ষীদের গুলিতে খুন হন । রাজীব গান্ধী বোমায় বিস্ফোরনে মারা যান ।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর শ্বশুর রাজেন্দ্র ভাদ্রাকে দিল্লির একটি গেস্ট হাউসে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। জয়পুর দিল্লি হাইওয়েতে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ননদ। মোরাদাবাদের একটি হোটেলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ননদ মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। রাজীব গান্ধীর দুই সেরা বন্ধু, মাধবরাও সিন্ধিয়া এবং রাজেশ পাইলট, তিনজনই একসঙ্গে বিয়ার বারে যেতেন যেখানে সোনিয়া বিয়ের আগে বার ড্যান্সার ছিলেন। রাজেশ পাইলট সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন এবং মাধবরাও সিন্ধিয়া বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন।
আমরা দেখেছি যে কেরালায় নাম্বি নারায়ণকে জেলে পাঠানো হচ্ছে, গোধরা এবং মালেগাঁও ঘটনায় হিন্দুদের জড়িত করা হচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে… হিন্দু সন্ত্রাসবাদ শব্দের জন্ম… কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারি… দেশকে দুর্বল করছে। দেশে ৪০ থেকে ৭ দিনের মধ্যে গোলাবারুদ জরুরী মজুদ করা… সেনাবাহিনীকে গোলাবারুদ না দেওয়া, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট না দেওয়া, যুদ্ধবিমান না কেনা, কাশ্মীর থেকে হিন্দু পণ্ডিতদের বিতাড়িত করা… ২৬/১২-এর জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি… চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে পরে অস্বীকার… প্রমাণ দেওয়ার বিষয়ে স্পষ্টীকরণ, ব্যাংকের অস্বীকৃতি সত্ত্বেও ঋণ খেলাপিদের কোটি কোটি টাকার ঋণ দেওয়া প্রভৃতি একাধিক ঘটনার কোনো উত্তর নেই । আর সবচেয়ে মজার বিষয় হল সংসদে হামলার দিন সংসদে যাননি সোনিয়া-রাহুল গান্ধী ! একসঙ্গে এতগুলো ঘটনাক্রম কি নিছক কাকতালীয় নাকি বৃহত্তর বৈদেশিক ষড়যন্ত্রের অঙ্গ তার উত্তর আজও মেলেনি ।।
★ মডিফায়েড হিন্দুর লেখা প্রতিবেদনের বঙ্গানুবাদ ।