এইদিন ওয়েবডেস্ক,রাঁচি,১৫ অক্টোবর : ঝাড়খণ্ডের দুমকার নাভাদিহ গ্রামে এক হিন্দু নাবালিকাকে গনধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে । গত ১৩ অক্টোবর মেয়েটি মামার বাড়িতে বেড়াতে গেলে স্থানীয় ৪ মুসলিম যুবক মিলে তাকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ । রবিবার সন্ধ্যায় যখন মেয়েটির আত্মীয়রা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন সেই সময় তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে ইংরাজি নিউজ পোর্টাল অর্গানাইজ উইকলি । পরে কিশোরীর পরিবারের লোকজন তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে প্রতিবেশী আজমির মনসুরির বাড়ি থেকে একটা মেয়ের কান্না শুনে ভিতরে ঢুকলে ৪ মুসলিম যুবককে তার উপর পাশবিক অত্যাচার চালাতে দেখে ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন সরফরাজ আনসারি এবং সরফরাজ মানসুরিকে নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন ধরে ফেলে । কিন্তু রেহান মনসুরি এবং রাজু আনসারি নামে অপর দুই অভিযুক্ত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় । ঘটনার পর বাড়ির মালিক আজমিরও নিখোঁজ বলে জানা গেছে। উভয় অভিযুক্তকে পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
এদিকে এই ঘটনায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে । গ্রামে পুলিশ পিকেট বসাতে হয়েছে । যে কোনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এড়াতে আশেপাশের থানা থেকে অতিরিক্ত বাহিনীকে ডেকে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। নির্যাতিতা নাবালিকা মেয়ের আত্মীয়দের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সারিয়াহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। নির্যাতিতা তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়েছে ।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, নাবালিকা গোড্ডা জেলার বাসিন্দা । দুর্গা পূজার সময় সে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল । তাকে একা পেয়ে অভিযুক্তরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় । ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে, জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য মমতা কুমারীও নাভাদিহ গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি পুলিশ আধিকারিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
এদিকে ঝাড়খণ্ড থেকেই আরেকটি ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে যেখানে লাতেহার জেলার মহুয়াদন্ডে তিনজন অভিযুক্তের দ্বারা একটি নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর, শনিবার সন্ধ্যায় মেয়েটি বন্ধুর সাথে রাবণ দহন অনুষ্ঠান দেখে ফেরার সময় এই জঘন্য অপরাধের ঘটনা ঘটে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ওয়ারিস খান, গুলজার আনসারি এবং যুবরাজ কুমার । নির্যাতিতা ও তার বন্ধুকে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের কাছে পথ আটকায় ওই ৩ জন । তারা কিশোরীর বন্ধুকে মারধর করে । এরপর তিনজন নাবালিকাকে ধর্ষণ করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন নাবালিকা বাড়িতে পৌঁছে পরিবারের সদস্যদের কাছে ঘটনার কথা খুলে বলে । ১৩ অক্টোবর মহুয়াদন্ড থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এদিকে, কংগ্রেস শাসিত ঝাড়খণ্ডের আইনশৃঙ্খলার বর্তমান অবস্থার নিন্দা করে, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবু লাল মারান্ডি বলেছেন যে উপজাতি ও দলিত সম্প্রদায়ের নাবালিকা কন্যাদের গণধর্ষণের ঘটনা সমগ্র রাজ্যকে লজ্জায় ফেলেছে। ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী ও দলিত সম্প্রদায়ের মেয়েরা ক্রমাগত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে এবং এই ধরনের লজ্জাজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার পরিবর্তে এবং ধর্ষকদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে, হেমন্ত সোরেনের সরকার ধর্ষণের ঘটনাগুলি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে ।’ এই ধরনের ঘটনাকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বিজেপির নেতা আরও মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা রাজ্যের মহিলাদের ভয়ের পরিবেশের মধ্যে থাকতে বাধ্য করেছে।
উল্লেখ্য,ঝাড়খণ্ডে মহিলাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের জঘন্য অপরাধের ঘটনা বেড়েছে এবং একটি রিপোর্ট অনুসারে,চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্যে তফসিলি উপজাতি এবং তফসিলি বর্ণের মহিলাদের বিরুদ্ধে মোট ১১৮ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।।