এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৬ অক্টোবর : ফের ওয়াকফ সংশোধনী বিলে বিরোধিতা করল তৃণমূল ও কংগ্রেস । সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিজেপির সাংসদের সঙ্গে তুমুল বাকবিতন্ডায় জড়ালেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি ও কংগ্রেসের সাংসদ গৌরব গগৈ । বৈঠকে বিজেপির যে সমস্ত সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন, নিশিকান্ত দুবে, দিলীপ সাইকিয়া, অভিজিৎ গাঙ্গুলি প্রমুখ । ওয়াকফ বোর্ডে মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব নিয়ে সাংসদদের মধ্যে তোলপাড় হয়েছিল ।
বিরোধীরা বিজেপি সাংসদদের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ ভাষা ব্যবহার করার অভিযোগ তোলে এবং টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে বিরোধীরা । বিরোধীদের অভিযোগ যে কমিটির চেয়ারপার্সন জগদম্বিকা পাল নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছেন না, এবং বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। একই সঙ্গে বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, বিরোধী সদস্যরা স্পিকারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন। মঙ্গলবার(১৫ অক্টোবর) এই বৈঠক হয় ।
প্রসঙ্গত,গত ২৮ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকার ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পেশ করেছিল। কিন্তু বিরোধী দলগুলো এ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। তাদের বিরোধিতার পর গত ৮ আগস্ট বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (জেপিসি) পাঠায় সরকার। এরপর বিল নিয়ে আলোচনা চলছে। ১৪ অক্টোবর, কর্ণাটক রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আনোয়ার মণিপদি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে ওয়াকফ জমি কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। এরপরই সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে বিরোধীরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিলের বিষয়ে তাদের মতামত উপস্থাপনের জন্য ডাকা সদস্যদের মধ্যে মণিপদী ছিলেন।নিয়ম উদ্ধৃত করে, বিরোধী দলগুলি দাবি করেছে যে এই কমিটির বৈঠকে ‘উচ্চ মর্যাদাবানদের’ বিরুদ্ধে অপ্রমাণিত অভিযোগ করা যাবে না। কমিটির চেয়ারম্যান তার আপত্তি নাকচ করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
রিপোর্ট অনুসারে, গত মাসে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে জগদম্বিকা পালের কাছে একটি চিঠি লিখে ওয়াকফ বিলের ১.২৫ কোটিরও বেশি আবেদনের বিষয়ে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে তদন্ত দাবি করেছিলেন নিশিকান্ত । জাকির নায়েকের মতো মৌলবাদী গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি বা বিদেশী শক্তি এতে জড়িত থাকতে পারে বলেও তিনি অভিযোগ করেছিলেন।
ওয়াকফ বোর্ড আইন ১৯৯৫-এর ধারা ৪০ অনুসারে, যদি ওয়াকফ বোর্ড মনে করে যে ওয়াকফ বোর্ডের কোনও সম্পত্তির উপর অধিকার রয়েছে, তাহলে ওয়াকফ বোর্ড স্বতঃপ্রণোদিতভাবে বিবেচনা করতে পারে এবং সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ওয়াকফ বোর্ড নিজেই সম্পত্তির তদন্ত করে রায় দেয়। ওয়াকফ বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও কোনো সমস্যা হলে তিনি ওয়াকফ বোর্ড ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারেন। তবে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার প্রক্রিয়া বেশ জটিল। আপনি হাইকোর্টে যেতে পারেন, তবে একটি জটিল আইনি প্রক্রিয়ার পরেই।
ওয়াকফ আইনে কী পরিবর্তন চায় সরকার ?
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যমান ওয়াকফ বোর্ড আইনে প্রায় ৪০ টি সংশোধন করতে চায়। অনেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াকফ-এ নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর সরকারের জোর দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি সংক্রান্ত ক্ষমতা সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে বলেও বলা হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়েই সবচেয়ে বেশি আপত্তি তুলেছে মুসলিম সংগঠনগুলির পাশাপাশি কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস,সিপিএম ও আসাদুদ্দিন ওয়াইসিরা ।।