এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুম্বাই,১৫ অক্টোবর : মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে গত ৯ অক্টোবর বাবা সিদ্দিকীকে হত্যার পর সারা দেশে খবরে রয়েছেন গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। বর্তমানে গুজরাটের উচ্চ-নিরাপত্তার সবরমতি জেলে বন্দী গ্যাংস্টার লরেন্স, দাউদ ইব্রাহিমের ডি কোম্পানির মতোই তার নিজস্ব গ্যাং তৈরি করছে এবং তার দলে ৭০০ শুটার রয়েছে বলে জানা গেছে । শুধু তাই নয়, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)ও স্বীকার করেছে যে লরেন্স দাউদ ইব্রাহিমের ‘ডি কোম্পানি’র মতো বিষ্ণোই একটি গ্যাং গড়ে তুলেছেন । দিল্লি ও তার আশেপাশে এলাকায় এই বিষ্ণোই গ্যাং বেশি সক্রিয় । বছরের পর বছর ধরে মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন হাজি মাস্তান,দাউদ ইব্রাহিম, ছোট শাকিল, আবু সালেম, ছোট রাজনরা রাজত্ব করে গেছে এবং এখন সেই সাম্রাজ্যের অধিপতি লরেন্স বিষ্ণোই। বাবা সিদ্দিকী হত্যার পর এখন একটাই প্রশ্ন আলোচিত হচ্ছে যে মুম্বাইয়ে নব্বই দশকের সন্ত্রাস আবার দেখা যাবে কি না?
প্রসঙ্গত,কংগ্রেসের শাসনে হাজি মাস্তান ১৯৫০-৭০ এর দশকে মুম্বাইয়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ছিলেন। তিনি ছিলেন তার সময়ের সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী চোরাকারবারী এবং রাজনীতিতেও হাজী মাস্তানের প্রভাব সে সময় বেড়ে যায়। এরপর দাউদ ইব্রাহিম ৭০-এর দশকে প্রবেশ করে । দাউদ ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে বড় নাম। তার সাম্রাজ্য মুম্বাই থেকে দুবাই হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তার গ্যাং ১৯৮০ -এর দশকে সক্রিয় হয়, যা ‘ডি কোম্পানি’ নামে পরিচিত। এরপর ১৯৯৩ সালে মুম্বাইতে বিস্ফোরণ হয় এবং এই বিস্ফোরণগুলিতে দাউদের নাম উঠে আসে, তারপরে সে দুবাইতে পালিয়ে যায় । দাউদ চম্পট দেওয়ার পর ধীরে ধীরে আন্ডারওয়ার্ল্ড এবং মুম্বাই ও মহারাষ্ট্রের গ্যাংদের শক্তি কমতে থাকে। তবে, দিল্লি এবং আশেপাশের রাজ্যগুলিতে অপরাধীদের নতুন নেটওয়ার্কের উত্থান শুরু হয় ।লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং এখন সবচেয়ে আলোচিত হয়ে উঠেছে, এই গ্যাংটি রাজস্থান থেকে শুরু হয়ে উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। লরেন্স বিষ্ণোই এই গ্যাংয়ের প্রধান নেতা। লরেন্স বিষ্ণোই পাঞ্জাবের ফাজিলকা জেলার দুতারনওয়ালি গ্রামের বাসিন্দা। বিষ্ণোই তার কলেজে থাকাকালীন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রবেশের পর ধীরে ধীরে কুখ্যাত গুন্ডা হয়ে ওঠে। লরেন্স প্রাথমিকভাবে চণ্ডীগড় এবং পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একাডেমিক প্রতিষ্ঠানকে প্রভাবিত করতে শুরু করেন। শুরুতে ছোটখাটো অপরাধ করে বিতর্কে থাকতেন। এখান থেকে তার অপরাধী নেটওয়ার্ক বাড়তে থাকে এবং সে একটা দল তৈরি করে। তার কলেজের বন্ধু এবং আরও অনেক যুবক অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে এই দলটি একটি সংগঠিত গ্যাংয়ে পরিণত হয়।
দিল্লি পুলিশের রেকর্ড অনুসারে, বিষ্ণোই নিজে কখনও নিজে হাতে কাউকে হত্যা করেননি তবে গুজরাট জেল থেকে একটি গ্যাং চালানোর সবচেয়ে বড় গ্যাংস্টার হয়ে উঠেছে এবং তার মোডাস অপারেন্ডি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের মতো। এনআইএ -এর মতে, বিষ্ণোইয়ের এখন সারা দেশে শার্পশুটার সহ ৭০০ সদস্যের শক্তিশালী গ্যাং রয়েছে । গোল্ডি ব্রার, শচীন থাপন, আনমোল বিষ্ণোই, বিক্রমজিৎ সিং, কালা জাথেদি এবং কালা রানার মতো অন্যান্য কুখ্যাত গ্যাংস্টারা রয়েছে তার দলে ।।