এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগণা,০৭ অক্টোবর : দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগরের মহিষমারি থানা এলাকার কৃপাখালি এলাকার বাসিন্দা মাত্র ৯ বছরের এক শিশুকন্যার উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে নরপশু মোস্তাকিন সরদার নামে ১৯ বছরের এক নরপশু । রবিবার আলিপুর বডিগার্ড লাইনে পুজো উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অপরাধীর আগামী ৩ মাসের মধ্যে ফাঁসি চেয়েছেন । পাশাপাশি তিনি আরজি কর কান্ডের মতই পুলিশকে দরাজ সার্টিফিকেটও দেন । কিন্তু পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অধীস্থ পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট । পাশাপাশি জয়নগরের মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহনাওয়াজের ভূমিকা বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ উঠছে । এদিকে এই নৃশংস বর্বরোচিত ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও রাজ্য পুলিশকে ধিক্কার জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
জয়নগরের মহিষমারি থানা এলাকার কৃপাখালির ৯ বছরের এক শিশুকন্যার উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে খুনের ঘটনার তদন্তে কোনো ফাঁক নেই বলে শনিবার ঘোষণা করেছিলেন পুলিশ সুপার পলাশ ঢালি। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তে গাফিলতির জন্য কলকাতা হাইকোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য পুলিশ। এই মামলায় কেন এখনও পকসো আইনের ধারা যোগ করা হয়নি সেই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি তীর্থঙ্গর ঘোষ।
দ্রুত পকসো আইনের ধারা যোগের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । পাশাপাশি হিন্দুস্থান টাইমস বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে রবিবার কলকাতা হাইকোর্টে নির্যাতিতা শিশুরর দেহের ময়নাতদন্ত সংক্রান্ত মামলার শুনানির পর তার বাবার পক্ষের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর সন্ধে ৭.৩০-৮ নাগাদ শিশুটির পরিবার ফাঁড়িতে অভিযোগ জানাতে গেলে ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহনাওয়াজ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। সেই সাথে মৃত শিশুর মা রবিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে যারা ফাঁড়িতে গিয়েছিল পুলিশ তাদের পিটিয়ে বার করে দিয়েছিল ।
প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গ্রামের এক গৃহশিক্ষকের কাছে টিউশন পড়তে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি মহিষমারি থানা এলাকার কৃপাখালি গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীটি ৷ পরে রাতের দিকে বাড়ির কয়েক’শ মিটার দূরে ফাঁকা মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুর নিথর দেহ । এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযুক্ত যুবককে চিহ্নিত করে রাতেই মোস্তাকিন সরদার (১৯) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ । শিশুর দেহ উদ্ধারের পর পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে পড়ে । আরজি করের ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুন ঘটনার মতই জয়নগরের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর ধর্ষণ খুনের ঘটনায় ফের কাঠগড়ায় তোলা হয় রাজ্য পুলিশকে ।
এদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় রাজ্য সরকারকে তুলোধুনো করে রবিবার সন্ধ্যায় একটা বড়সড় পোস্ট করেছেন । তিনি লিখেছেন,’নৃশংসভাবে খুন হওয়া ছোট মেয়ের পরিবার সিবিআই তদন্তের জন্য মাননীয় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বলে রাজ্য সরকার ভয়ে ভয়ে আছে, যেকারণে হঠাৎ হাইপার-অ্যাকটিভ হয়ে উঠেছে। পবিত্রতার প্রয়াসে, রাজ্য বিরল ঘটনা হিসাবে রবিবার কলকাতায় মাননীয় হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করে এবং মৃত শিশুর ময়নাতদন্তের জন্য যে কোনও কেন্দ্রীয় সরকারী হাসপাতালে পরিচালিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল।ভিকটিমের বাবার পক্ষে আইনজীবী উল্লেখ করেছেন যে সিবিআই-এর কাছে তদন্ত হস্তান্তরের জন্য তাঁর মক্কেলের ইচ্ছা আছে ।
নির্যাতিতার পরিবারের ব্যক্ত ইচ্ছার ব্যাপারে রাষ্ট্র কেন নীরব? তদুপরি, রাজ্য পুলিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই সত্য থেকে স্পষ্ট যে মাননীয় আদালত কেস ডায়েরি এবং তদন্ত প্রতিবেদন দেখে রাজ্য পুলিশকে পকসো আইনের পাশাপাশি ধর্ষণ সংক্রান্ত ধারাগুলি যুক্ত না করার জন্য সতর্ক করেছে যেখানে অভিযোগপত্রে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে ।’ তিনি লিখেছেন,’মনে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের অনাচার থেকে ক্ষয়িষ্ণু রাজ্যকে রক্ষা করতে তার ক্রমাগত ব্যর্থতায় জনগণের ক্ষোভ দেখে ভীত এবং দৃশ্যত কেঁপে উঠেছেন। রাজ্য পুলিশের লজ্জা, মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা।’।