এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,০৬ অক্টোবর : দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগরের মহিষমারির পর এবারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরে এক গৃহবধূকে বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণের পর জোর করে মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে । প্রতিবেশীরা অভিযুক্ত যুবককে ধরে গনধোলাইয়ের পর পুলিশের হাতে তুলে দেয় । এদিকে এই ঘটনায় রাজ্যে নারী নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন,’প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙলেই বাংলার মানুষ এখন শুনতে পাচ্ছেন একের পর এক ধর্ষণকাণ্ডের খবর। আজও পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকায় একজন গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হলো। পৈশাচিক ধর্ষণের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে অসহায় মহিলাটির মুখে ঢেলে দেওয়া হল বিষাক্ত কীটনাশক। এ কোন অন্ধকারাচ্ছন্ন আতঙ্কের রাজ্যে বাস করছি আমরা! যেখানে বাড়ির মধ্যেও মহিলাদের ন্যূনতম সুরক্ষা নেই! মাসিক ১,০০০ টাকার বিনিময়ে কি বাংলার মেয়েদের সম্ভ্রমটুকুও বন্ধক রাখতে হবে পশ্চিমবঙ্গের অযোগ্য অপদার্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে?
ধিক্কার! বাংলার মেয়েদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত না করতে পারলে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করুন ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী!’
জানা গেছে,পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার ভুবনমঙ্গলপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে । ওই গৃহবধূর ওপর প্রতিবেশী যুবকের দীর্ঘদিন ধরেই কুনজর ছিল। তাঁকে একাধিকবার আগে কুপ্রস্তাবও দিয়েছিল। শনিবার রাতে বধূর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। সেই সূযোগে বাড়িতে চড়াও হয় অভিযুক্ত যুবক । বধূকে সে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে মারধর করে ধর্ষণ করে । এরপর বধূর মুখে কীটনাশক ঢেলে দেয় ওই নরপশু । পরে প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানতে পেরে বধূকে উদ্ধার করে তমলুকের একটা নার্সিংহোমে ভর্তি করে । কিন্তু আজ রবিবার ভোররাতে মৃত্যু হয় তার । এদিকে বধূর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছাতেই ক্ষিপ্ত জনতা অভিযুক্তকে ধরে গণধোলাই দিতে শুরু করে । খবর পেয়ে পটাশপুর থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসী । গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে এর আগে ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল কিন্তু পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি । ঘটনাটা কি হিরো ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা গ্রাম জুড়ে ।
আরজি করের ৩১ বর্ষীয়া তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড শুধু রাজ্য বা দেশ নয়, তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা বিশ্ব । ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তার অধীনস্থ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে বা এখনো উঠছে । অপরাধীদের আড়াল করার জন্য প্রমান লোপাট, গাছাড়া ময়নাতদন্ত এবং মৃতদেহ অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে দাহ করার মত অভিযোগে অভিযুক্ত শাসকদল ও কলকাতা পুলিশ । আরজি কর কান্ডের জের এখনো চলছে । তার মাঝেই শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগরের মহিষমারি থানার কৃপাখালি এলাকার মাত্র ৯ বছরের এক শিশুকন্যাকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনায় মোস্তাকিন সরদার (১৯) নামে একজন নরপশুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । যদিও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারায় মামলা করা হয়নি বলে জানা গেছে । পাশাপাশি রাতেই থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ । যেকারণে শিশুটির দেহ উদ্ধারের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানায় গ্রামবাসী । জয়নগরের ঘটনার তোলপাড়ের মাঝেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরে ঘটে গেল ধর্ষণ খুনের ঘন ঘটনা । এদিকে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে থাকায় রাজ্য সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে উঠছে গুরুতর সব অভিযোগ । একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার জন্য সরকার ও পুলিশের ঢিলেঢালা পদক্ষেপকে দায়ি করেছেন অনেকে ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরের ঘটনার পর রাজ্য বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের প্রতিক্রিয়া, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের পর এবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর।স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী বধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর জোর করে কীটনাশক খাইয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে।রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা থেকে প্রমাণিত রাজ্যে আইনের শাসন নেই।মমতা ব্যানার্জীর রাজত্বে বাংলার পুলিশ প্রশাসন তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।বাংলার জনগন এই স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় চায়।মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ব্যর্থ।আপনি অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।’।