এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৫ অক্টোবর : আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসক ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুনের প্রকৃত অভিযুক্তরা আজও অধরা । এই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন । এর মাঝেই শারদোৎসবের তৃতীয়ার দিন আরও একটা শিহরণ জাগানো ধর্ষণ খুনের ঘটনা ঘটেছে এরাজ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগরের মহিষমারি থানা এলাকার কৃপাখালির মাত্র ৯ বছরের এক শিশুকন্যার উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে নরপশু মোস্তাকিন সরদার নামে ১৯ বছরের এক নরপশু । ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুন ঘটনার মতই জয়নগরের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর ধর্ষণ খুনের ঘটনায় ফের কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে রাজ্য পুলিশকে । পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছেন আরজি কার ঘটনা থেকে কিছুই শেখেনি পুলিশ । পাশাপাশি তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন,পুলিশ কেবল স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে নৃশংস শক্তি দিয়ে দমন করতে জানে । সেই সাথে তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগেরও দাবি তুলেছেন ।
জয়নগরের মহিষমারি থানা এলাকার কৃপাখালি গ্রামের দুধের শিশুর উপর ঘটে যাওয়া নৃশংস পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে খুনের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দু অধিকারী এক্স-এ লিখেছেন,’দেখে মনে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ দুর্ভাগ্যজনক আরজি কর ঘটনা থেকে কিছুই শেখেনি, যখন একজন ৩১ বছর বয়সী পিজিটি ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪-পরগনা জেলার জয়নগরের মহিষমারী এলাকার চতুর্থ শ্রেণির আট বছরের ছাত্রী,যে টিউশন ক্লাসে যাওয়ার পথে গতকাল বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল । পরিবারের সদস্যরা কয়েকজন প্রতিবেশীর সাথে পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের খবর দেয়। দ্রুত সাড়া দেওয়ার পরিবর্তে, উল্লিখিত পুলিশ সদস্যরা আগ্রহী ছিল না এবং তাদের দায়িত্ব থেকে গাবাঁচানোর চেষ্টা করছিল। পরে গ্রামবাসী নিজেরাই নিখোঁজ শিশুটির খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালায় এবং ভোরের দিকে মহিষমারীর একটি পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।’ পুলিশ তৎপর থাকলে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করা যেত, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শিশুটি তার জীবন দিয়ে মূল্য পরিশোধ করেছে কারণ পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছুক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু অধিকারী ।
তিনি লিখেছেন,’এরপরই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা হতাশায় পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেয়। হত্যার আগে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মনে করায় তাদের ক্ষোভ ন্যায্য। ক্যাম্পে থাকা পুলিশরা যদি একটু সহানুভূতি দেখাত এবং গতকাল মেয়েটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করত, তাহলে মেয়েটিকে বাঁচানো যেত এবং একই গ্রামবাসীরা তাদের প্রশংসা করে মালা পরিয়ে দিত। পরে গ্রামবাসীরা থানার দিকে মিছিল করলে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পুলিশ একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে কিন্তু মৃতদেহটি পাওয়া যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আজ সকালে থানায় অবরোধকারী উত্তেজিত গ্রামবাসীদের শান্ত করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। পুলিশ গতকাল তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারলে পুরো পরিস্থিতি এড়ানো যেত।’
পরিশেষে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন,’রাজ্য সরকার, প্রশাসন, শীর্ষ পুলিশ সর্বদা মুখে পরিষেবা দেয় যে কীভাবে রাজ্য মহিলাদের জন্য নিরাপদ, কীভাবে সিসিটিভি ইনস্টল করা হচ্ছে এবং মহিলাদের সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি বাড়ানো হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে যখন এটির বাস্তবে যখন প্রয়োজন হয় তখন কেউ সিসিটিভির কথা তোলে না। পুলিশ শুধু পরিকল্পনা করছে কিভাবে যে কোন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে নৃশংস শক্তি দিয়ে দমন করা যায়।’।