এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৪ অক্টোবর : দেশের আরও ৫ টি ভাষাকে “ধ্রুপদী ভাষার” মর্যাদা দিল কেন্দ্র সরকারের ভাষাগত বিশেষজ্ঞ কমিটি । বাংলা ছাড়াও তালিকার বাকি চারটি ভাষা হল মারাঠি, পালি, প্রাকৃত এবং অসমীয়া । বৃহস্পতিবার ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ লিখেছেন,’আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে মহান বাংলা ভাষাকে একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে দুর্গাপূজার শুভ সময়ে। বাংলা সাহিত্য বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি সারা বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষীদের অভিনন্দন জানাই ।
ভাষার প্রাচীনত্ব, ঐতিহ্য এবং শিলালিপি প্রমাণ সহ কিছু বিষয় বিবেচনা করেই ভাষাগত বিশেষজ্ঞ কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে । মূলত কয়েকটি পয়েন্টকে এক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । প্রথমতঃ, ১,৫০০-২,০০০ বছর সময়কালে এর প্রাথমিক পাঠ্য/লিপিবদ্ধ ইতিহাসের উচ্চ প্রাচীনত্ব । দ্বিতীয়তঃ,প্রাচীন সাহিত্য/পাঠের একটি অংশ, যা বক্তাদের প্রজন্মের দ্বারা একটি ঐতিহ্য হিসাবে বিবেচিত হয় । তৃতীয়তঃ, জ্ঞানের পাঠ্য, বিশেষ করে কবিতা ছাড়াও গদ্য পাঠ, শিলালিপি এবং শিলালিপি প্রমাণ । তবে ধ্রুপদী ভাষা এবং সাহিত্য তার বর্তমান রূপ থেকে আলাদা হতে পারে বা তার শাখাগুলির পরবর্তী রূপগুলির সাথে বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলে জানিয়েছে ভাষাগত বিশেষজ্ঞ কমিটি ।
এদিকে কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ সমীক ভট্টাচার্য । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শুভেন্দু এক্স-এ লিখেছেন,’মোদের গরব, মোদের আশা আ-মরি বাংলা ভাষা…আমি কৃতজ্ঞতা জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি কে, ওনার নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারের মন্ত্রিসভা আমাদের মাতৃভাষা আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষাকে “ধ্রুপদী ভাষার” মর্যাদা দেওয়ার জন্য।দুর্গা পুজোর সময়ে এই ঘোষণা হওয়ায় এবং বাংলা ভাষাকে এই সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দেওয়ায় সারা বাংলার মানুষ আনন্দিত। এই স্বীকৃতির ফলে বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা এবং সাহিত্য চর্চার জন্য বিশেষ অনুদান দেবে কেন্দ্রীয় সরকার, এর ফলে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি ও দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থসমূহ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে।
পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলাদা বিভাগ গঠন করে বাংলা ভাষাকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করানোর সুযোগ বাড়বে। এছাড়া ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি হওয়ার সাথে দেশে ও বিদেশে সাহিত্যিক, গবেষক ও ভাষাবিদদের জন্য বিশেষ পুরস্কারের আয়োজন করা হবে। নানা রকম উদ্যোগের ফলে, বাংলা ভাষার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।’
রাজ্য সভার বিজেপি সাংসদ সমীক ভট্টাচার্য টুইট করেছেন,’বাংলাকে শাস্ত্রীয় ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। এই গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি আমাদের ভাষা এবং এর সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচারকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলবে।’।