এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুজরাট,৩০ সেপ্টেম্বর : ভারতের শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের মুসলিম তোষামোদি রাজনীতি নতুন নয়। এখন তারা খোলামেলা তোষামোদ করতে শুরু করেছে । কয়েকদিন আগে, গুজরাট সরকার সোমনাথ মন্দিরের জমিতে কথিত ‘ল্যান্ড জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযান শুরু করেছিল। প্রায় এক মাস তদন্তের পর অবৈধভাবে নির্মিত মসজিদ, দরগা ও সমাধির বিরুদ্ধে এই অভিযান শুরু হয়। বুলডোজার ব্যবহার করে কোটি টাকার সরকারি জমি খালি করেছিল গুজরাট সরকার । জবরদখল উচ্ছেদ অভিযানের সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এবারে খোলাখুলি মুসলিমদের উসকানি দিতে শুরু করে দিল কংগ্রেস । গুজরাটের কংগ্রেস পার্টির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি এবং বর্তমান বিধায়ক অমিত চাভদা মুসলমানদের উসকানি দিয়ে বলেছেন,দরগা বা কবরস্থান বাঁচাতে হলে বুলডোজারের সামনে শুয়ে পড়ুন । চাভদা তার এক্স হ্যান্ডেলের মাধ্যমে জারি করা একটি বিবৃতিতে অবৈধ উপাসনালয় ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শনিবার তিনি লিখেছেন, ‘উন্নয়নের নামে বুলডোজারের রাজনীতি দুঃখজনক। ভেরাভালে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শাসকরা ধর্মীয় স্থান ও বাড়িঘর বুলডোজ করে ভয়ের শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। ক্ষমতাসীনরা সংবিধানকে বিকৃত করে স্বেচ্ছাচারিতায় পরিণত হচ্ছে।’
সোমনাথ মন্দিরের জমি জবরদখল উচ্ছেদ অভিযানের পরে, কংগ্রেস নেতারা দখলদারদের পরিবর্তে সরকারী পদক্ষেপে দোষ খুঁজছে । তবে, সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের সঙ্গে এই ধ্বংসের কোনও যোগসূত্র নেই৷ যদিও বিধায়ক অমিত চাভদা সংবিধানের উদ্ধৃতি দিয়ে কথিত মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় রীতিমতো কান্নাকাটি করছেন । কিন্তু সত্য হল যে কোটি কোটি টাকার সরকারি জমি বহু বছর ধরে দখল করে দরগা,কবরস্থান নির্মান করে দখল করে রাখা হয়েছিল । এক মাস তদন্তের পর প্রয়োজনীয় নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি প্রশাসনের।
কিন্তু কংগ্রেস বিধায়ক মুসলমানদের উস্কে দিয়েছেন ।
অমিত চাভদার মতো, অন্য কংগ্রেস বিধায়ক বিমল চুসমাদারও জবরদখল উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে মতামত রয়েছে। বেআইনি উপাসনালয়গুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরে, সুবিমল চুসমাদা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে গিয়ে বুলডোজারের বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কে দেন। কংগ্রেস বিধায়ক বলেছিলেন, ‘যখন কেউ বুলডোজার নিয়ে আসবে, তখন আপনার মোবাইল ফোনটি চালু করুন এবং এর সামনে শুয়ে পড়ুন।’
কংগ্রেস বিধায়কের এই উস্কানিমূলক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, তাঁর সঙ্গে উপস্থিত মুসলমানদের ভিড় হাততালি দিয়ে বিমল চুসমাদাকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। সুবিমল চুসমাদা মসজিদ ও দরগাকে মন্দিরের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। মোবাইল অন রেখে শুয়ে থাকার পর বুলডোজার আর এগোতে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে কংগ্রেস বিধায়ক বলেছেন, ‘আমাদের কী বাঁচাতে হবে ?’ এর জবাবে সামনে উপস্থিত জনতা বলে ‘দরগাহ’। জনগণের স্লোগানকে আরও উস্কে দিয়ে বিমল চুসমাদা বলেছিলেন, ‘আমাদের দরগা এবং কবরস্থান বাঁচাতে হবে ।’ কংগ্রেস তার বক্তব্যে হিন্দুদেরও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন,’আজ যদি দরগা ভেঙে ফেলা হয়, কাল মন্দিরও ভেঙে ফেলা হবে।’ এসব দিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক নিজেকে হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্বের প্রবক্তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।
প্রসঙ্গত,সুবিমল চুসমাদা মানুষকে উস্কে দেওয়ার জন্য কুখ্যাত । এই প্রথম নয় যে কংগ্রেস বিধায়ক সুবিমল চুদাসামা এমন উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। কিছুদিন আগে সোমনাথ এলাকায় আরও অনেক অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হলে তিনিও জনতাকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তারপর প্রশাসনকে ‘উল্টে’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন সুবিমল চুদাসামা।
আসলে দেশের হিন্দুদের জন্য অন্যতম বিখ্যাত তীর্থস্থান গুজরাটের গির সোমনাথ জেলার সোমনাথ মন্দিরের কাছে প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো একটি অবৈধ কবরস্থান, মসজিদ, দরগা এবং আবাসিক ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে । প্রায় ১০০ একর জমি যা সঠিক জরিপ এবং নোটিশের পরেও খালি করা হয়নি, গুজরাট প্রশাসনের দ্বারা সাফ করা হয়েছে। জানা গেছে, ৩৬টি জেসিবি, ৭০টি ট্রাক্টর, ৫টি হিটাচি মেশিন, ১০টি ডাম্পার এবং ১,৪০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে । সীমিত এলাকায় বিক্ষোভ ও আন্দোলনের ভিত্তিতে শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এছাড়াও, গুজরাট সরকার ওয়াকফের দাবি করা সম্পত্তিও দখলমুক্ত করেছে । সোমনাথ মন্দিরের কাছে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার জমি ওয়াকফ দখল করে নিয়েছিল।। বেআইনিভাবে গড়ে ওঠা অবৈধ বাড়িগুলোও ভেঙ্গে সরকারি জমি বেদখল করা হয়েছে । দখল বিরোধী অভিযানের অংশ হিসাবে, নয়টি ধর্মীয় স্থান এবং ১০০ টি আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে, যার ব্যয় প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। আনুমানিক ১০২ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।।