গত ১০ সেপ্টেম্বর, একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছিল যে, বিগত ৫০ দিনে, ট্রেনে নাশকতার চেষ্টার ১৮ টি ঘটনা সনাক্ত করা হয়েছে, যার কারণে বড় রেল দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়েছে, বর্তমানে এই সংখ্যা ১৮ এর চেয়ে অনেক বেশি এবং কিছু ক্ষেত্রে, মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত । অনেক ক্ষেত্রে, রেলওয়ে ট্র্যাকের পাশে নির্মিত অবৈধ বসতি থেকে আসা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ১০-১২ বছর বয়সী ছেলেদের রেলপথে পাথর সাজাতে দেখা গেছে। এমন নয় যে তাদের কেউ বিভ্রান্ত করেছে, তবে সত্য হল তারা তাদের প্রভুদের দ্বারা প্রশিক্ষিত, যাদের উদ্দেশ্য দেশে বিদ্রোহ সৃষ্টি করা ।
গত আগস্টে, পাকিস্তানি সন্ত্রাসী ফারহাতুল্লাহ ঘোরি (Farhatullah Ghori) ভারতে তার সহযোগীদের (স্লিপার সেল) দিল্লি এবং মুম্বাই সহ ট্রেন লাইনচ্যুত করার জন্য প্ররোচিত করেছিল। জব্বলপুর-নাগপুর রেললাইন সহ একাধিক ট্রেনে ভাঙচুরের ঘটনার পরে এটি প্রকাশ্যে এসেছে। ফারহাতুল্লাহ ঘোরি বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফে বিস্ফোরণের জন্য দায়ী বলে জানা গেছে। তদন্তকারীরা জানতে পারে যে সে তার স্লিপার সেল থেকে আইএসআই-এর সহায়তায় সেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল এবং তার স্লিপার সেলকে ভারতে ট্রেনে হামলা চালাতে বলেছিল। এ থেকে আমরা অনুমান করতে পারি ভারতের কত মুসলমান পাকিস্তানের সমর্থক এবং তার স্লিপার সেল হিসেবে কাজ করছে ।
এখন যদি আমরা গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫০ দিন পিছিয়ে যাই, তারিখটি ২০-২১ জুলাই, রাহুল গান্ধী ৬ জুলাই লোকো পাইলটদের সাথে দেখা করেছিলেন এবং ঠিক তার ১৫ দিন পরে, রেলপথে গ্যাস সিলিন্ডার, পাথর, লোহার রড, সিমেন্টের পিলার রেখে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল । রেলওয়ে ম্যানেজমেন্ট বলেছিল যে রাহুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা অভিযুক্ত লোকো পাইলটরা বহিরাগত, যার মানে তারা জাল রেলকর্মী । এরপর ৭ আগস্ট ওই কথিত লোকো পাইলটদের সংসদে ডেকে রেলমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের অভিযোগ, কেবিনে তারা পর্যাপ্ত আরাম ও মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পায় না।
এখন প্রশ্ন উঠছে এই ধরনের লোকো পাইলটরা তাদের সমস্যার কথা রেলওয়ে বোর্ডকে আগেই জানিয়েছিলেন নাকি রাহুল গান্ধীকে তাদের মসিহা বানিয়েছিলেন ? এতেই কিছুটা সন্দেহ জাগে যে, রেলওয়ে ট্র্যাক উপড়ে ফেলা এবং ট্রেন লাইনচ্যুত করার চেষ্টার কাজ শুরু হয়েছিল তাদের সাথে দেখা করার পর এবং আগস্টে তাদের সাথে দেখা করার পর, ফারহাতুল্লাহ ঘোরি ২৯শে আগস্ট এগিয়ে আসে। স্বভাবতই একাংশ থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে যে লন্ডন এবং আমেরিকার সাথে যোগসূত্রের মতই কি পাকিস্তানের সাথে রাহুল গান্ধীর সংযোগ আছে ?
এখন মনে হচ্ছে এই ষড়যন্ত্রের কিছু অংশ উন্মোচিত হবে । কারণ রাহুল যাদের অধিকারের দাবি করে, তাদের মধ্যে সাবির নামে একজন রেল কর্মচারীকে ১৮ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীর থেকে কর্ণাটকগামী একটি বিশেষ ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করতে দেখা গেছে । সেই সময় সৈন্যরা ওই ট্রেনে ছিল। সাবির বুরহানপুর ট্র্যাকে ১০ টি ডেটোনেটর রেখেছিল এবং যদি সেগুলি বিস্ফোরিত হত তবে পুরো ট্রেনটি উড়িয়ে দিতে পারত। একাংশের প্রশ্ন যে রাহুল গান্ধী কি নাশকতার চেষ্টাকারী সাবির এবং তার সম্প্রদায়ের জন্যই কি ন্যাহ্য অধিকারের দাবি করছেন?
ট্রেনে নাশকতার চেষ্টা ষড়যন্ত্রে রাহুল গান্ধীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা ভিত্তিহীন নয় কারণ রাহুল নিজেই বলেছিলেন যে নরেন্দ্র মোদী আবার প্রধানমন্ত্রী হলে দেশে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে এবং দেশে কেরোসিন ছড়িয়ে পড়েছে, যা দরকার তা হল একটা স্ফুলিঙ্গ । যদিও রাহুল গান্ধী এবং তার দল কংগ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে তার এখনো নিন্দাও করেন । এখন এই সমস্ত ঘটনাগুলি এই সত্যকে পূর্ণ শক্তি দেয় যে ভয়াবহ ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনা এই টুল কিট গ্যাংয়ের কোনও ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে ! যদি এই প্রকার অভিযোগ বাস্তব প্রমানিত হয় তাহলে দেশের নিরাপত্তার খুবই ভয়ঙ্কর হবে ।।