এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ সেপ্টেম্বর : টালা থানাতে বসেই আরজি করের ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুন ঘটনার যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছিলেন তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল । আদালতে এই তথ্য জানিয়েছে সিবিআই। সিবিআই বলেছে যে টালা থানার রেকর্ডগুলি কেবল নষ্টই করা হয়নি, কিছু ভূয়ো রেকর্ডও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের পোশাকে অভিজিৎ এত বড় মারাত্মক অপরাধ কার নির্দেশে করেছিল তা এখনো স্পষ্ট নয় ।
বুধবার শিয়ালদা আদালতে মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআইয়ের দাবি, মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের যাবতীয় তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছেন প্রাক্তন ওসি। পাশাপাশি ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভুয়ো রিপোর্টও তৈরি করেছিলেন তিনি। এই বিষয়ে, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা কলকাতার বিশেষ আদালতকে বলেছে যে তদন্তের সময়,তারা টালা থানার কিছু সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছিল, যা তারা বাজেয়াপ্ত করে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠিয়েছে ।
অভিজিৎ মন্ডল এবং সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মামলায় নতুন মোড় দিতে তারা রেকর্ডে কিছু জাল জিনিস রেখেছিল এবং যাবতীয় প্রমাণ নষ্ট করেছিল।সিবিআই আদালতকে জানিয়েছে যে তারা উভয় অভিযুক্তের মোবাইল ফোনও ডেটা বের করার জন্য সিএফএসএল-এ পাঠিয়েছে। এই দুটি তথ্যের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে সিবিআই ।
উভয় অভিযুক্তের রিমান্ড শেষ হওয়ার পরে, সিবিআই তাদের বিশেষ আদালতে পেশ করেছিল,আদালতে অভিজিৎ ও সন্দীপকে নিজেদের হেপাজতে রাখার আবেদন জানায়নি সিবিআই। আদালত আবার তাদের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে । এই মামলায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে সঞ্জয় রায়, সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে। তিনজনই অপরাধের ষড়যন্ত্রে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল ।
আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ বর্ষীয়া তরুনী ডাক্তারকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনাটি গত ৯ আগস্ট প্রকাশ্যে আসে । ঘটনাটি ওই দিন সকাল ১০টায় টালা থানায় জানানো হলেও পুলিশ আধিকারিক রাত সাড়ে ১১টায় এফআইআর দায়ের করে । এ ঘটনার পর অনেক চিকিৎসক রাস্তায় নেমে ন্যায়বিচারের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং প্রমাণ নষ্টের কথা উল্লেখ করেছিলেন। নিহতের পরিবারের সদস্যরাও জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পর তাদের মেয়ের মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি । বিতর্ক বাড়তে থাকায় ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। যেখানে থানার ইনচার্জ অভিজিৎ মন্ডলকে ১৪ সেপ্টেম্বর এবং সন্দীপ ঘোষকে ১৫ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও প্রাক্তন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের দিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগের আঙুল উঠেছে । জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের চাপে তাকে সিপি এর পদ থেকে সরানো হলেও অন্য আর একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ।।