এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ সেপ্টেম্বর : মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বীরভূমে গিয়েছিলেন । সেখানেও তিনি দামোদর সংলগ্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকে দায়ি করে মন্তব্য করেছিলেন ‘ম্যান মেড বন্যা’ । যদিও ডিভিসি ও বিজেপি থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছে যে জলাধার থেকে জল ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারকে এনিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আজ বুধবার আরও চাঁচাছোলা ভাষায় মমতা ব্যানার্জিকে আক্রমণ করেছেন । তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেজে লিখেছেন, ‘মা মাটি মিথ্যা…তার নাম মমতা। ডিভিসি জল ছাড়বে জেনে দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলাকে সতর্ক করে গত ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে “পশ্চিমবঙ্গ সরকার” নবান্ন থেকে চিঠি পাঠায়। এখন বলছেন ম্যান মেড বন্যা ! কেন্দ্রীয় সরকারের নামে অপপ্রচার বন্ধ করুন। আপনাকে আর কেউ বিশ্বাস করে না। করবে না।’
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নাগরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারির স্বাক্ষরিত ওই চিঠিও শেয়ার করেছেন সুকান্ত মজুমদার । চিঠিতে বলা হয়েছে,’সদস্য সচিব, ডিভিআরআরসি, সিডব্লিউসি, মাইথন জানিয়েছেন যে বিরাজমান আবহাওয়া পরিস্থিতি, অনিয়ন্ত্রিত বিশাল প্রবাহ এবং মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারে জলের স্তরের দ্রুত বৃদ্ধির প্রবণতার কারণে, ডিভিআরআরসি ১৭.০৯.২৪ থেকে এবং পরবর্তী পরামর্শ পর্যন্ত ২.৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়বে । এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে নদী তীরবর্তী নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অতএব, আপনাকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে, এই জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি), উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত করুন এবং অবিলম্বে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন।তদুপরি, কংসাবতী বাঁধ থেকে প্রচুর পরিমাণে ছাড়ার কারণে, ডিভিসি এবং কংসাবতী নদীর খাল সিস্টেমের জলের প্রভাবে হলদি এবং রূপনারায়ণ নদীর পূর্ব মেদিনীপুরে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এই চ্যানেলগুলি বরাবর উচ্ছেদের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।’
চিঠিটি স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক বিভাগ,গণপূর্ত বিভাগ,কৃষি বিভাগসহ রাজ্যের মোট ১০ বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। অথচ মঙ্গলবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকে দায়ি করে বলেছেন,‘ম্যান মেড বন্যা’ । তিনি এবিষয়ে একটা বড়সড় পোস্ট করেছিলেন গতকাল । সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন,’ম্যান মেড বন্যা’র করাল গ্রাসে আমার রাজ্যবাসী। এইরকম দুঃসহ ঘটনা বাংলায় বিরল। মানুষের সেবা ব্যাতীত আমার জীবনে আর কোনো উদ্দেশ্য নেই। তাই আজ বীরভূমে একটি পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলাম।বীরভূমের বিভিন্ন বন্যা কবলিত অঞ্চলে জল ধীরে ধীরে নামছে। আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকার দিবারাত্রি চেষ্টা করছে এই কষ্টের সুরাহার জন্য। প্রশাসন সবরকম সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর। বাড়ি থেকে রাস্তা সবকিছু পুনরায় তৈরি করে দেওয়া হবে। যে সকল পরিযায়ী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, বন্যার ফলে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন এবং বিনা চিকিৎসায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের সকলের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে সরকারের তরফ থেকে। আমি সর্বদা তাঁদের দুঃখে-কষ্টে পাশে আছি।আমি মা জগজ্জননীর কাছে প্রার্থনা জানাই, সকলের জীবন যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যায়। এইরকম কষ্টের দিন যেন আর দেখতে না হয় বাংলাকে কখনও। সকল দুর্যোগ-দুর্ভোগ থেকে যেন মুক্তি পায় আমার রাজ্যবাসী।’।