এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৩ সেপ্টেম্বর : বেশ কিছুদিন ধরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে দেশীয় সন্ত্রাসীরা । কোথাও রেললাইনে রাখা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার,কোথাও লোহার রড, আবার কোথাও রেললাইনে সিমেন্টের পিলার রেখে ট্রেন লাইনচ্যুত করার চেষ্টা হয়েছে । যদিও চালকদের তৎপরতায় এখনো পর্যন্ত তেমন দুর্ঘটনা ঘটেনি । বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪) মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুর জেলার রেলপথে ডেটোনেটর উদ্ধার করা হয় । সন্দেহ করা হয়েছিল যে এই ডেটোনেটরগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটা ট্রেনটিকে লাইনচ্যুত করার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল । যে টেনটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সৈন্য ও অফিসার ভ্রমণ করছিলেন। এই ঘটনায় সাবির নামে এক রেলকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পেছনে তার কি ছিল তা উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রেলওয়ের কর্মী সাবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি), এটিএস এবং আরপিএফ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ট্র্যাকে ডেটোনেটর স্থাপন করা সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র নাকি নিছক বদমায়েশি ছিল তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি৷ সাবিরের গ্রেপ্তারের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। তদন্তের নির্দেশও জারি করেছে মন্ত্রণালয়। বিষয়টি সেনাবাহিনীর সঙ্গে জড়িত, তাই বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে ।
প্রসঙ্গত,ঘটনাটি ঘটেছে বুরহানপুরের নেপানগর এলাকায়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর, এখানকার সাগফাটা এলাকা থেকে, আর্মি স্পেশাল ট্রেনটি জম্মু ও কাশ্মীর হয়ে কর্ণাটকের দিকে যাচ্ছিল। ট্র্যাকে হঠাৎ বিস্ফোরণ শুরু হলে লোকো পাইলট ট্রেন থামিয়ে বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়ান। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কন্ট্রোল রুমে জানানো হয় এবং এরপরই এজেন্সিগুলো তদন্ত শুরু করে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় রেলের জনসংযোগ আধিকারিক ডক্টর স্বপ্নীল নীলা বলেছেন,উদ্ধার হওয়া ডেটোনেটরগুলি মূলত রেলওয়ে ব্যবহার করে । তবে যেখানে সেগুলি পাওয়া গেছে সেখানে এগুলির থাকার কথা নয় । কারন সাধারণত কুয়াশা বা কুয়াশায় ট্রেন থামাতে ওই ডেটোনেটর ব্যবহার করা হয়। তাদের ভয়েস ড্রাইভারকে সতর্ক করে এবং সে ট্রেন থামাতে শুরু করে। এই ডেটোনেটরগুলি স্টেশন মাস্টার, কী ম্যান এবং লোকো পাইলট ইত্যাদির কাছে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি আজ সোমবার ভোরে পঞ্জাবের (Punjab) ভাতিন্দায় রেললাইনের (Rail tracks) উপর পরপর ৯ টি লোহার রড উদ্ধার হয়েছে । যদিও ট্রেন চালকের তৎপরতায় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের করেছে রেলপুলিশ। ট্রেন লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যে কোনও দুষ্কৃতীর দল এই ষড়যন্ত্র করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
জানা গেছে,আজ ভোর তিনটে নাগাদ ভাতিন্দা থেকে দিল্লিগামী লাইনের উপর লোহার রডগুলি ফেলে রাখা হয়েছিল। সেই সময় ওই লাইনেই একটি মালগাড়ি আসছিল । রডগুলি চালকের চোখে পড়তেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন । ভাতিন্দার রেলপুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক শবিন্দর কুমার জানান, ঘটনাস্থল থেকে এখনও পর্যন্ত ৯টি লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে । পাশাপাশি একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার উত্তরপ্রদেশে রেললাইনের উপর থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার উদ্ধার হয়েছিল। সেদিনও চালক ঠিক সময়মতো ব্রেক কষে দেওয়ায় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। এর আগেও রাজস্থানে রেললাইনের উপর ফেলে রাখা হয়েছিল বিশাল সিমেন্টের পিলার । সম্প্রতি রেলের তরফে এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত আগস্ট থেকে অন্তত ১৮ বার ট্রেন লাইনচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। যার মধ্যে শুধু আগস্টেই ১৫ বার ট্রেন লাইনচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাকি ৪টি ঘটেছে সেপ্টেম্বরের শুরুতে।।