প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২২ সেপ্টেম্বর : ডিভিসি’র ছাড়া জলে পুজোর আগে বন্যার কবলে পড়েছে পূর্ব বর্ধমান সহ বাংলার আটটি জেলা। তার কারণে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই বন্যাকে ’ম্যান মেইড বন্যা’ বলে অবিহিত করে কাঠগড়ায় তুলেছেন ডিভিসি’কে। ইতিমধ্যেই বন্যা কবলিত বিভিন্ন জেলায় পৌছে গিয়ে ক্ষতি ক্ষতি সরজমিনে চাক্ষুষ করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী।একই কাজে সোমবার বর্ধমানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তা নিয়েই জেলা পুলিশ ও প্রশানের তৎপরতা এখন তুঙ্গে উঠেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,বিশেষ কর্মসূচী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব বর্ধমান জেলায় আসছেন।এই খবর রবিবার বেলায় জেলা প্রশাসনের সদর দপ্তরে এসে পৌঁছায়। তারপরই শুরু হয়ে যায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি।জরুরী বৈঠকে বসেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা । বিকেলে জেলাপ্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ। বিদুৎ দপ্তরের আঞ্চলিক অধিকর্তা গৌতম দত্তও বৈঠক করেন।
সাম্প্রতিক বন্যায় জামালপুরের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের শিয়ালী, মাঠ শিয়ালী কোরা ,অমরপুর,মুইদিপুর, ফতেপুর প্রভৃতি এলাকাকা ভয়ানক ভাবে জলপ্লাবিত হয়ে পড়ে । একই ভাবে বানভাসী হয়ে পড়ে রায়না ২ ব্লকের গোতান অঞ্চলের বড়বৈনান সহ কয়েকটি গ্রাম।বন্যার সময় জলের চাপে জামালপুরে দামোদরের বাঁধের একাধীক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেচ দফতর বাঁধ মেরামতির কাজে হাতা লাগোনোয় জামালপুরে অনেক এলাকা বন্যা প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যায় ।
বন্যার এহেন পরিস্থিতির খবর নবান্নেও পৌছায়। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জামালপুর ও রায়নার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে রাজ্যের অপর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও থাকেন। ওই দিন বিকেলে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলাশাসকের দপ্তরে প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন অরূপ বিশ্বাস,সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা , সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ও স্বপন দেবনাথ ।
এদিকে দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীর জল কমতেই শুরু হয়েছে আর এক বিপত্তি। ধ্বসে পড়ছে দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীর পাড়ের বোল্ডার বাঁধাই । যা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে জামালপুরের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের বাসিন্দাদের ।এ নিয়ে এখানকার গ্রাম বাসীদের বক্তব্য ,’ফের ভারী বৃষ্টিপাতের কথা খোষনা করেছে আবহাওয়া দফতর ।ওই সময় ডিভিসি’র জলাধার থেকে যদি আবারও ব্যাপক জল ছাড়া হয় তাহলে নদীর পাড় ধ্বসিয়ে জল বহু গ্রামে ঢুকে যাবে । সেই রকমটা হলে বন্যা পরিস্থিতি এবারের থেকেও আরও ভয়ংকর রুপ নেবে’ । তাই ধ্বসে পড়া নদী পাড়ের বোল্ডার পিচিং অংশ দ্রুত বোল্ডার দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন জ্যোৎশ্রীরাম এলাকার বাসিন্দারা ।
অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) অমিয় কুমার দাস এদিন জানান, সোমবাবের বৈঠকে জেলার মন্ত্রী,বিধায়ক,সাংসদ,জেলা পরিষদের সভাধিপতি, কৃষি ,সেচ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিক গণ ছাড়াও প্রশাসনের সব দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন। মূলত বন্যায় জেলার ক্ষয়ক্ষতি নিয়েই মূলত আলোচনা হবে।।