প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৭ জুলাই : অতিমারিতে গ্রামগঞ্জের গরিব মানুষের আর্থিক হাল ফেরাতে তাঁদের বেশীকরে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।কিন্তু শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদন্দের জেরে তা পণ্ড হতে বসেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায় । ১০০ দিনের কাজ পরিচালনা নিয়ে বুধবার এই পঞ্চায়েত এলাকার জোড়বাঁধে চরমে উঠে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘাত। দু- পক্ষ সন্মুখ সমরে অবতীর্ণ হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । শেষ পর্যন্ত প্রশাসন বাধ্য হয় জোড়বাঁধে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করে দিতে । বিরোধীদের পাশাপাশি ‘জব কার্ড’ শ্রমিকরাও এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।
সংঘাতের কারণ প্রসঙ্গে জামালপুরের শুড়েকালনা নিবাসী জেলা তৃণমূল নেতা প্রদীপ পাল বলেন, ‘জামালপুর ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উদয় দাস নিজের মন মত কিছু ’জবকার্ড’ শ্রমিককে দিয়ে ১০০ দিনের কাজ করাচ্ছে।অথচ জোড়বাঁধ সংসদ এলাকায় প্রায় দু’শো জন ’জবকার্ড’ শ্রমিক রয়েছে। প্রদীপ বাবুর আরো অভিযোগ, এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকে কিছু না জানিয়েই উপপ্রধান বিভিন্ন কাজ করছে । এ দিনও এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই জোড়বাঁধ এলাকায় ১০০ দিনের কাজ শুরু কর হয়। সেই খবর পেয়ে এলাকার অন্য ’জবকার্ড ’শ্রমিকরা বাঁধে গিয়ে আপত্তি তোলে ।তা নিয়ে সংঘাত চরমে ওঠে। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি মারামারির উপক্রম হয়। এই খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামালদেয় ।কাজ না পাওয়া জবকার্ড শ্রমিকদের আপত্তিতে পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায় “ ।এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যা শর্মিলা দাস বলেন,তাঁকে না জানিয়েই উপপ্রধান তাঁর সংসদ এলাকায় কিছু ’জবকার্ড’ শ্রমিক নিয়ে কাজ করাচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ। এমনটা চলতে দেবেন না বলে পঞ্চায়েত সদস্য শর্মিলা দাস এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন ।
যদিও এদিন জোড়বাঁধ এলাকায় থাকা ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজার উজ্জ্বল চক্রবর্তী দাবি করেন ,নিয়ম মেনে মাষ্টাররোল তৈরী করে এদিন জোড়বাঁধ এলাকায় একশোজন ’জবকার্ড’ শ্রমিককে নিয়ে কাজ শুরু হয়।এলাকার কয়েকজন জোড়বাঁধে এসে নানা অজুহাত তুলে কাজ বন্ধ করে দেয় ।
আপত্তিকারীদের তৃণমূলের লোক বলে মানতে চাননি উজ্জ্বল বাবু । তিনি দাবি করেন,
আপত্তিকারীরা সকলে বিজেপির সমর্থক ।
সাপারভাইজার উজ্জ্বল চক্রবর্তী বলেন , গোটা ঘটনা বিষটি তিনি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছেন’ ।পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উদয় দাস এদিনের ঘটনা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও প্রতিকৃয়া দিতে চান নি ।তবে তিনি সাফাই দিয়েছেন ,সরকারী নিয়ম মেনেই পঞ্চায়েত কাজ করছে।কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশ জোড়বাঁধের জবকার্ড শ্রমিকরা বলেন ,’নেতায় নেতায় দন্দে যেন তাঁদের কাজ বন্ধ না হয় । তাঁরা যাতে বেশি করে ১০০ দিনের কাজ পান তার ব্যবস্থাই করুক প্রশাসন ।’
বিজেপির জামালপুর বিধাসভার আহ্বায়ক জীতেন ডকাল বলেন, “এদিন জোড়বাঁধে’ যা কিছু ঘটেছে তার সবটাই তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দ ।নিজেদের গোষ্ঠীদন্দ আড়াল করতে তৃণমূলের এক গোষ্ঠী এখন অপর গোষ্ঠীকে বিজেপি বানিয়ে দিচ্ছে ।এরথেকে বড় লজ্জার আর কিছু হতে পারে না ।জোড়বাঁধ এলাকার মানুষ তৃণমূলের এইসব নাটক সন্মন্ধে ওয়াকিবহাল রয়েছেন বলে জীতেন বাবু মন্তব্য করেন ।
জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন,’১০০ দিনের কাজ নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি। সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত যাতে ১০০ দিনের শুরু হয় সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।’।