এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৮ সেপ্টেম্বর : বন্ধুদের সকলের হাতেই স্মার্টফোন । এজন্য বাবাকে একটা স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার জন্য বাবার কাছে বেশ কিছুদিন ধরেই আবদার করছিল দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া মেয়ে । কিন্তু জনমজুর বাবার একসঙ্গে অত টাকা খরচ করে মেয়েকে স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই । সেকারণে মেয়ের কাছে কিছুদিন তিনি সময় চেয়ে নেন । মেয়েকে স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার জন্য অল্প অল্প করে টাকাও জমাচ্ছিলেন তিনি । কিন্তু তাকে সেই সময় না দিয়েই অভিমানে বিষপান করে আত্মঘাতী হলেন ওই ছাত্রী। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বামুনাড়া গ্রামে । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে বিষপান করে শম্পা বাগদি (১৮) নামে ওই ছাত্রী । পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ভাতার ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । এদিকে একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মৃতার বাবা সুখলাল বাগদি ও মা গীতাদেবী । শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রাম জুড়ে ।
জানা গেছে,বাবুনাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন শম্পা। তারা দুই ভাইবোন । শম্পা বড় । মৃতা ছাত্রীর শোকস্তব্ধ বাবা সুখলালবাবু বলেন,’স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের হাতে দামি ফোন দেখে আমাকে ওই রকম একটা ফোন কিনে দিতে বলেছিল মেয়ে । কিন্তু আমার দিন আনা দিন খাওয়া সংসার । তাই ফোন কিনে দেওয়ার জন্য মেয়ের কাছে কিছুদিন সময় চেয়েছিলাম । একটু একটু করে টাকাও জমাতে শুরু করি । কিন্তু মেয়ে আমাকে এটুকু সময় দিল না ।’
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,কয়েকদিন ধরেই মনমরা ছিল শম্পা । মঙ্গলবার থেকে গ্রামে গ্রাম্যদেবী মনসার পুজো শুরু হয়েছে । দুপুর থেকে পরিবারের সকলেই ঠাকুর তলায় গিয়েছিল । বাড়িতে একাই ছিল শম্পা । সেই সুযোগে ধান জমিতে দেওয়ার জন্য বাড়িতে রাখা কীটনাশক পান করে নেয় সে । তারপর সন্ধ্যায় যখন সকলে বাড়ি ফেরে তখন দেখতে পায় মেয়েটি নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছে । তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । আজ বুধবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ ।।