এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৪ সেপ্টেম্বর : ২০২০ সালে দাঙ্গা মামলায় ১০ আসামিকে খালাস দিয়েছে দিল্লির একটি আদালত । মুক্তিপ্রাপ্তরা হল : মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, মোহাম্মদ শোয়েব, মোহাম্মদ ফয়সাল, মোহাম্মদ তাহির, শাহরুখ, রশিদ, আজাদ, আশরাফ আলী, পারভেজ এবং রশিদ । দিল্লির গোকালপুরী থানা পুলিশ এই ১০ জনের বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশ, অগ্নিসংযোগ এবং বাড়ি ভাঙা সহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের জন্য মামলা দায়ের করেছে । কিন্তু আদালত বলেছেন, এই মামলায় পুলিশ সদস্যদের দেওয়া সাক্ষ্য বিশ্বাস করা যায় না। অতিরিক্ত দায়রা জজ পুলস্ত্য প্রমাচলা মামলার শুনানি করেন।
দিল্লি পুলিশ আদালতকে বলেছিল যে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়, এই ১০ জন দাঙ্গাবাজ জনতার অংশ ছিল এবং প্রথমে ব্রিজপুরীর চমন পার্ক এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ের নিচতলায় একটি দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। এরপর দোতলায় ডাকাতি হয়। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনা করে আদালত বলেছেন যে, মামলার দুই প্রত্যক্ষদর্শী পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। হেড কনস্টেবল সঞ্জয় তার জবানবন্দিতে বলেছেন যে তিনি কনস্টেবল বিপিন এবং সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর হরি বাবুর সাথে ডিউটিতে ছিলেন। কিন্তু আদালত জানতে পেরেছিল যে সেদিনের ডিউটি রোস্টার অনুসারে, বিপিন এবং বাবুকে চমন পার্কে ডিউটি দেওয়া হয়েছিল, সঞ্জয় জোহরিপুরে ডিউটিতে ছিলেন। এতে তার বিশ্বাসযোগ্যতা দুর্বল হয়ে পড়ে। সঞ্জয়কে তার দায়িত্ব পরিবর্তনের জন্য আলাদা কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এমন কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
আদালত তৃতীয় তদন্তকারী অফিসার পরিদর্শক মনোজের বক্তব্যের অসঙ্গতিও উল্লেখ করেছে। বিচারকের মতে, ওই বছর ৮ এপ্রিল,তারিখে মামলার ফাইল পড়ে তিনি জানতে পারেন যে সঞ্জয়, বিপিন এবং বাবু ব্রিজপুরী এলাকায় ডিউটিতে ছিলেন। কিন্তু প্রমাণে দেখা যায়, গত ৭ এপ্রিল যখন ফাইলটি মনোজকে দেওয়া হয়, তখন তাতে কোনো ডিউটি রোস্টার ছিল না।এর পর বিচারক জিজ্ঞেস করেন,
প্রশ্ন হল ডিউটি রোস্টার ফাইলে না থাকলে ফাইল বিশ্লেষণে বিপিন, সঞ্জয় ও বাবুর দায়িত্বের কথা তারা জানল কী করে? এই কারণে দাবিটি কৃত্রিম বলে মনে হচ্ছে। বিচারকের মন্তব্য,আমি বুঝতে পারি যে দাঙ্গা এবং কোভিড-১৯ এর মতো সমস্যার কারণে তদন্তে বিলম্ব হতে পারে। কিন্তু দাবির কৃত্রিমতা ভিন্ন কথা। এতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়।এর ভিত্তিতে বিচারক পুলস্ত্য প্রমাচলা ১০ অভিযুক্তকে খালাস দিয়েছেন ।।