এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ সেপ্টেম্বর : সম্ভাব্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় কলকাতা শহরের একাংশে মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ করল পুলিশ । শুক্রবার কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের স্বাক্ষরিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত ইনপুট এবং তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে নীচে নির্ধারিত এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটি সহিংস বিক্ষোভ/মিছিল/মিটিং-এর যথেষ্ট কারণ রয়েছে । জনসাধারণের অংশ বা সংস্থা যাতে শান্তি ভঙ্গ, জনসাধারণের শান্তি, স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটায়, মানুষের জীবনের জন্য বিপদ এবং সেইসাথে ডাক্তার, নার্সিং স্টাফ, চিকিৎসা কর্মী এবং উল্লিখিত এলাকায় আইনত নিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে সেজন্য উক্ত এলাকাগুলিতে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী, আগামী ১৬-৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরজি কর সংলগ্ন বেশ কিছু জায়গায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। এদিকে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচারের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ কলকাতা পুলিশের এই নির্দেশিকার পর তাদের সেই আন্দোলনে অনেকাংশেই লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে ।
বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভকে বন্ধ করতেই কলকাতা পুলিশ এই নির্দেশিকা জারি করেছে । তিনি পুলিশের ওই নির্দেশের কপি এক্স-এ পোস্ট করে লিখেছেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে চূর্ণ করতে মরিয়া, কলকাতার পুলিশ কমিশনার ১৬-৩০ সেপ্টেম্বরের জন্য নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করেছেন৷ বিনীত গোয়েল একজন পুলিশ অফিসার কম এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুল বেশি ৷ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রমাণ (গুলি) মুছে ফেলার ক্ষেত্রে তার সন্দেহজনক ভূমিকা এখন সর্বজনীন ডোমেইনের বাইরে। তিনিই ছিলেন, যিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় লঙ্ঘন করে, নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিডিয়ার কাছে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি যদি কলকাতায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে না পারেন তবে তার পদত্যাগ করা উচিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অভিব্যক্তি এবং বিক্ষোভকে সীমিত করা বৈধ নয়। আরজি কর আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
কলকাতা পুলিশ কমিশনারের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,কলকাতা শহরের শ্যামপুকুর, উল্টাডাঙ্গা এবং টালা থানার আওতাধীন এলাকা: বেলগাছিয়া রোড/জে.কে. মিত্র রোড ক্রসিং প্রভৃতি এলাকায় এই আদেশ লঙ্ঘনকারী যেকোন ব্যক্তি ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস), ২০২৩ এর ২২৩ ধারার অধীনে শাস্তিযোগ্য হবে । প্রসঙ্গত,আরজি করের ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুনের ন্যায় বিচার আন্দোলনের বর্তমান এপিসেন্টার হল আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা । ফলে ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ খুনের প্রমান লোপাটের অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ কমিশনারের এই নির্দেশিকায় ফের তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল ।।