শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),১২ সেপ্টেম্বর : বাবা-মা না থাকার সুযোগে আটা চাইতে আসার ভান করে এক ১৫ বছর বয়স্ক হিন্দু কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ৷ আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ বা গনধর্ষণের পর নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তোলপাড়ের মাঝেই এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানা এলাকায় । কিশোরীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরে ফেলে এবং একটা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে দেয় । খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় । পরে নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে । ধৃত ব্যক্তিকে ইলিয়াস মল্লিকের ছেলে সান্টু মল্লিক হিসাবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ । তার বাড়ি মন্তেশ্বর থানার পুটশুড়ি গ্রামে । আজ বৃহস্পতিবার ধৃতকে কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,নির্যাতিতা কিশোরীর বাবা-মা দু’জনেই দিনমজুরের কাজ করেন । পুলিশের কাছে অভিযোগে নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, বুধবার সকালেও তারা যথারীতি মাঠে কাজে চলে গিয়েছিলেন । বাড়িতে একাই ছিল তাদের ১৫ বছর বয়সী মেয়ে । সকাল প্রায় ১০ টা নাগাদ ইলিয়াস মল্লিকের ছেলে সান্টু মল্লিক আটা কিনতে আসার ভান করে তাদের বাড়িতে আসে ৷ মেয়ে তাকে জানিয়ে দেয় যে বাড়িতে আটা নেই । এরপর সান্টু মল্লিক জোর করে ঘরে ঢুকে দরজা ভেজিয়ে দিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ শুরু করে এবং তাদের মেয়ের শরীরে অনুপযুক্তভাবে স্পর্শ করে । মেয়েকে নিজের কোলে জোর করে বসায় সান্টু মল্লিক। সান্টুর কুমতলব বুঝতে পেরে মেয়ে কোনো রকমে নিজেকে তার কবল থেকে মুক্ত করে এবং সাহায্যের জন্য চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মেয়েটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে৷ এদিকে বেগতিক বুঝে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ধরে ফেলে এবং নির্যাতিতাদের বাড়ির দাওয়ার একটা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে । পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় । এই ঘটনায় মন্তেশ্বর থানার পুলিশের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নির্যাতিতার পরিবার ও প্রতিবেশীরা । অভিযোগ যে পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতেই চাইছিল না । শেষে রাতের দিকে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ।
এদিকে একজন অল্প বয়সী মেয়ের সঙ্গে মধ্যবয়সী সান্টু মল্লিকের এই প্রকার কুকর্মে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপির মন্তেশ্বর-৩ মন্ডল সভাপতি সঞ্জীব হাজরা । তিনি অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবির পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন,’রাস্তাতে তো মেয়েরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেই,কিন্তু এরাজ্যের মেয়েরা নিজের বাড়িতেও সুরক্ষিত নয় । ওই মেয়েটির সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই । পুলিশের কাছে আমার একটাই দাবি যে অভিযুক্তর কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক ।’ একই দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার ও প্রতিবেশীরাও ।।