এইদিন ওয়েবডেস্ক,লখনউ,১১ সেপ্টেম্বর : কালিন্দি এক্সপ্রেস ট্রেনে নাশকতা চালানোর চেষ্টায় অভিযুক্ত শাহরুখ খান নামে এক ইতিহাস-পত্রককে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) । ছয় সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয় এবং প্রধান অভিযুক্ত শাহরুখ খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এটিএস সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের কানপুরে কালিন্দি এক্সপ্রেস গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আগুন লাগানোর ষড়যন্ত্রে সন্ত্রাসীদের জড়িত থাকার অনেক প্রমাণ পাওয়া গেছে । তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে,অভিযুক্ত শাহরুখ খান একজন মৌলবাদী। ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএস-এর খোরাসান মডিউলের সঙ্গে তার যোগসূত্র রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য,গত ৯ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের কানপুরের আনোয়ারগঞ্জ-কাসগঞ্জ রুটে চলা কালিন্দী এক্সপ্রেস (14117) একটি বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়ে যায় । ট্র্যাকে গ্যাস সিলিন্ডার দেখে ইমার্জেন্সি ব্রেক লাগিয়ে ট্রেন থামিয়ে দেন লোকো পাইলট। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। সিলিন্ডারে আঘাত করার পর সিলিন্ডারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্তের সময় সেখান থেকে একটি এলপিজি সিলিন্ডার পায়। কাছাকাছি একটি পেট্রোল বোতল এবং দেশলাই পাওয়া যায় । ঘটনাস্থলে একটি ব্যাগও পাওয়া গেছে, যাতে গানপাউডার ছিল বলে জানা গেছে ।
প্রসঙ্গত,সাম্প্রতিক সময়ে দেশীয় সন্ত্রাসীরা বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটানোর জন্য প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । রেল লাইনে বড় বড় পাথরের খন্ড, ধাতববস্তু রেখে ট্রেন লাইন চ্যুত করার চেষ্টার বহু প্রমান পাওয়া যাচ্ছে ।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট কানপুরেও সবরমতি এক্সপ্রেসের সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এই দুর্ঘটনায় ১৭টি কোচ লাইনচ্যুত হয় । এছাড়াও, আলিগড়ে ট্র্যাকের উপর একটি মোটরসাইকেলের চাকা রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় আফসান নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এই সমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যখন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী ফারহাতুল্লাহ ঘোরি ভারতে ট্রেন এবং অন্যান্য অবকাঠামোকে টার্গেট করার কথা বলছেন। পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী ফারহাতুল্লাহ ঘোরি স্লিপার সেলকে এই কাজ করতে বলেছিলেন। যে ভিডিওটি সামনে এসেছে তাতে সন্ত্রাসী ঘোরি বলেছিল যে ইডি সন্ত্রাসবাদের পিঠ ভেঙে দিচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সে সারাদেশের অবকাঠামোতে হামলার ডাক দিয়েছি । ভিডিওতে ঘোরি বলছেন কীভাবে ট্রেনে বিভিন্ন উপায়ে বিস্ফোরণ ঘটানো যায়। এ জন্য প্রেসার কুকারের মতো জিনিস থেকে বোমা তৈরির ধারণাও দেয় ওই সন্ত্রাসবাদী । সে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্ররোচনায় কাজ করছে ।
এর আগে ২০২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী কানপুর- ভিওয়ানি কালিন্দী এক্সপ্রেস বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণের তদন্ত করার সময়, নিরাপত্তা সংস্থাগুলি জইশ-ই-মোহাম্মদের একজন অপারেটিভের লেখা একটি চিঠি খুঁজে পেয়েছিল। চিঠিতে এরডিএক্স ব্যবহার করে একটি সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করার ষড়যন্ত্রের বিবরণ রয়েছে।
এই চিঠিতে শতাব্দী এক্সপ্রেস এবং দিল্লি-কানপুর রুটের একটি সেতুতে হামলার কথাও লেখা ছিল। কালিন্দী এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কানপুর সেন্ট্রাল স্টেশন ছেড়েছে হরিয়ানার ভিওয়ানির দিকে যাচ্ছিল । ট্রেনটি কানপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বরাজপুর স্টেশনে সন্ধ্যা ৬:৪০ নাগাদ পৌঁছালে সাধারণ বগির টয়লেটে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
চিঠি অনুসারে, কানপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি সেতুতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী একটি বিস্ফোরণ হওয়ার কথা ছিল। এরপর, দেড় কিলো আরডিএক্স ব্যবহার করে কানপুর-দিল্লি শতাব্দী এক্সপ্রেসে হামলা চালানো হয়। হামলার একদিন আগে দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালে বিস্ফোরকগুলো হস্তান্তর করার কথা ছিল। “৭৮৬” এবং “মেসেজ” শব্দটি চিঠির উপরের অংশে লেখা ছিল।।