প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১০ সেপ্টেম্বর : পুলিশের কব্জা থেকে ফের পালালো কুখ্যাত চোর বাসুদেব মণ্ডল।এই নিয়ে তিনবার পুলিশকে ধোকা দিয়ে পালালো কুখাত এই চোর।প্রথম কালকাতার বাগুইহাটি থানার পুলিশকে ধোকা দিয়ে পালায় । তার পর পুলিশ তাকে জালে পুরলেও চলতি বছরের ৯ জুলাই পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে সৌচাগারে যাওয়ার নাম করে বাসুদেব পুলিশকে বোকা বানিয়ে পালায়।এবার কুখ্যাত চোর বাসুদেব পুলিশকে বোকা বানিয়ে একেবারে খোদ কালন মহকুমা আদালত চত্ত্বর থেকে পালালো। কীর্তিমান এই চোর কে পাকড়াও করতে এখন হন্যে হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন,কালনা আদালত চত্ত্বর থেকে পালানো অপরাধী বাসুদেব মণ্ডলকে ধরার জন্য পুলিশ জোরদার অভিযানে নেমেছে ।
প্রেয়সীদের বাসনা পূরণের জন্যে অহরহ প্রয়োজন হত অর্থের। সেই অর্থ জোগাড় করতে ’চুরিতে’ হাত পাকায় যুবক বাসুদেব মণ্ডল।সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাসুদেব হয়ে ওঠে দক্ষিণবঙ্গের এক কুখ্যাত চোর। যে কলকাতার নিউটাউন ও বাগুইহাটি থানা থেকে শুরু করে পূর্ব বর্ধমান ও হুগলী জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্তাদের রাতের ঘুম সে কেড়ে নেয়।বিভিন্ন চুরির ঘটনায় জড়িত বাসুদেব নামটাই এখন পুলিশের কাছে কার্যত যেন ত্রাসের নাম হয়ে উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,কুখ্যাত চোর বাসুদেব মণ্ডলের বাড়ি হুগলী জেলার বলাগড় থানার আকতারপুর এলাকায়। তবে ৩৬ বছর বয়সী ধুরন্ধর বাসুদেব তাঁর চুরির সাম্রাজ্য প্রায় গোটা দক্ষিনবঙ্গ জুড়েই বিস্তার করেছে। বাগুইহাটি থানার পুলিশের কাস্টডি থেকে পালানোর বেশ কয়েক মাস পর ধরা পড়ে বাসুদেব । তা জানতে পেরে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে কুখ্যাত চোর বাসুদেব মণ্ডল কে হেপাজতে নেয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশ । তাকে জেরা করে পুলিশ একাধীক চুরির কিনারা করে।উদ্ধার হয় বাসুদেবের চুরি করা ৭টি মোটর বাইক ,১টি আইফোন,১টি ল্যাপটপ ,১ কার্টুন সিগারেট,১ কার্টুন রজনী তুলসী নামের গুটকা , ছাতা ২৫ টি এবং নগদ ২৪১০ টাকা উদ্ধার কর।হেপাজতের মেয়াদ শেষ হলে ৮ জুলাই জামালপুর থানার পুলিশ বাসুদেবকে বর্ধমান আদালতে পেশ করে ।সেখান থেকে বাসুদেবের ঠাঁই হয় বর্ধমান জেলে ।
কিন্তু তার পরেও পুলিশকে নিস্তার দেয় নি চৌর্যবৃত্তিতে সিদ্ধ হস্ত বাসুদেব । জালাই মাসের ৯ তারিখ সকালে বাগুইহাটি থানার পুলিশ বর্ধমান জেল থেকে বাসুদেব মণ্ডলকে নিয়ে গিয়ে থেকে নিয়ে গিয়ে বারাসাত আদালতে পেশের করে । পরে ওইদিন বিকেলে পুলিশের জাল গাড়িতে করে তারা তাকে ফের বর্ধমান জেলে নিয়ে আসছিল ।ওই সময় পুলিশ গাড়ি শক্তিগড়ে পৌছাতেই বাসুদেব শৌচাগারে যাওয়ার জন্যে পুলিশকে বলে । পুলিশ তাঁকে শৌচাগারে যেতে দিলে সেখান থেকে পালায় । পুলিশ ওইদিন রাত ভোর বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান চালিয়েও বাসুদেবকে আর নাগালে পায় না ।
এদিকে পুলিশকে বোকা বানিয়ে পালানোর পরেই জামালপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় চুরির ঘটনা ঘটায় বাসুদেব । টোটো থেকে শুরু করে বাইক চারি সবেতেই বাসুদেব জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিৎ হয় । এরই মধ্যে সোমবার জেলার কালনা থানার পুলিশ সোমবার রাতে আগ্নেআস্ত্র ও কার্তুজ সহ বাসুদেব মণ্ডলকে পাকড়াও করে । মঙ্গলবার তাকে পেশ করা হয় কালনা মহকুমা আদালতে । আদালতের লকআপ থেকে বাসুদেবকে বের করে এজলাসে হাজির করাতে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ । তখনই সে পুলিশকে বোকা বানিয়ে আবার পালিয়ে যায় ।।