এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ সেপ্টেম্বর : আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসক ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ বা গনধর্ষণের পর নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দলের ভূমিকায় এতটাই ক্ষুব্ধ করেছে যে খোদ দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে ইস্তফার দাবিতে অনড় রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার । তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ ও রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না ।
এদিকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষ করেছেন,’কোনও শিক্ষিত এবং যোগ্য ব্যক্তি রাজ্যের ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গ দিতে চাইছেন না ।’
বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন প্রাক্তন আইএএসস আধিকারিক জহর সরকার । সেখান থেকেই সাংসদ ও দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করে মমতা ব্যানার্জিকে চিঠি লিখেছিলেন রবিবার । শুধু আরজি করের ঘটনায় মমতা ব্যানার্জির ভূমিকাই নয়,দলীয় নেতাদের দূর্নীতি ও বাহুবল প্রদর্শন নিয়েও তিনি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । দুর্নীতি দমনে তৃণমূল সুপ্রিমোর সদর্থক ভূমিকা না থাকায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশও করেন । মমতা ব্যানার্জিকে লেখা জহর সরকারের দু’পাতার চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে । রবিবার বিকেলের দিকে খোদ মমতা ব্যানার্জি ফোন করে জহর সরকারকে সিদ্ধান্ত বদলের অনুরোধ করেছিলেন । কিন্তু দলনেত্রীর সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে এই পরিস্থিতিতে তাঁর আর সাংসদ পদে থাকা তার পক্ষে আর সম্ভব নয় ।
তরুনী চিকিৎসক ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ বা গনধর্ষণের পর নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দলনেত্রীর ভূমিকায় জহর এতটাই আহত হয়েছেন যে তিনি চিটিতে লিখেছেন,‘আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরোনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়ার ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ।’
এদিকে জহর সরকারের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘৃণ্য, জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাজ্যসভার বরিষ্ঠ সাংসদ এবং ভারতবর্ষের অন্যতম একজন কৃতি প্রাক্তন আইএএস মাননীয় জহর সরকার তাঁর সাংসদপদ এবং তৃণমূলের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিলেন। এর থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, কোনও শিক্ষিত এবং যোগ্য ব্যক্তি রাজ্যের ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গ দিতে চাইছেন না। রাজ্যবাসীর ভবিষ্যত ক্রমাগত অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি সাধারণ মানুষেরও কোনও বিশ্বাস আর অবশিষ্ট নেই। আপনার কু-শাসনে পশ্চিমবঙ্গের মা – মাটি – মানুষ আজ অসহায়। জনতা জানতে চাইছে, কবে আপনিও পদত্যাগ করবেন মাননীয়া! দফা এক দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ ।’।