এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুয়াহাটি,০৮ সেপ্টেম্বর : আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শনিবার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে যদি এনআরসি না হয় তাহলে আধার কার্ডও পাওয়া যাবে না । আসাম রাজ্যের ধুবরি, বারপেটা এবং মরিগাঁও প্রভৃতি মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলির জন বিন্যাসের আমূল পরিবর্তন দেখে আসামের মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে । এনিয়ে শীঘ্রই আদেশ জারি করা হবে। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আসামে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। যার জেরে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে আসাম সরকার ।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, যারা ২০১৫ সালে ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন (এনআরসি) এর অংশ হওয়ার জন্য আবেদন করেননি তাদের সরকার আধার কার্ড ইস্যু করবে না। তিনি বলেছেন যে এই সিদ্ধান্ত আসাম সরকার পরিচালিত একটি বৃহত্তর প্রচারণার অংশ। সিএম সরমা ধুবরি, বরপেটা এবং মরিগাঁওয়ের উদাহরণ দিয়েছেন, যেখানে আনুমানিক জনসংখ্যার চেয়ে বেশি আধার কার্ড জারি করা হয়েছে। এই তিনটি জেলাই মুসলিম অধ্যুষিত। আনুমানিক জনসংখ্যার অনুপাতে, ধুবড়িতে ১০৩ শতাংশ,বারপেটাতে ১০৩ শতাংশ এবং মরিগাঁওতে ১০১ শতাংশ আধার কার্ড জারি করা হয়েছে। তিনি বলেছেন,মনে হচ্ছে সন্দেহভাজন বিদেশীরাও এই জেলাগুলিতে আধার কার্ড পেয়ে গেছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সরমা বলেছেন যে এই কারণে রাজ্য সরকার ভবিষ্যতে আধার কার্ড ইস্যু করার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর অধীনে, এনআরসি আবেদন নম্বর জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হবে, যা ২০১৫ সালে আবেদন করার সময় তাদের দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য,২০১৫ সালে এনআরসি আপডেট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে ‘চূড়ান্ত এনআরসি’ প্রকাশের পরে, এটি বর্তমানে স্থবির অবস্থায় রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায়, ১৯৭১ সালের ২৪ শে মার্চের আগে রাজ্যে আসা আবেদনকারীদের এনআরসি-তে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং নাগরিক হিসাবে স্বীকৃত হতে হবে।
এনআরসি থেকে যাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল তাদের রাজ্যের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ব্যবস্থায় বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। এর জন্য আবেদন করা হয়েছিল ২০১৫ সালের মার্চ থেকে আগস্ট এর মধ্যে। এতে ৩ কোটি ৩০ লাখ ২৭ হাজার ৬৬১ জন আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালের আগস্টে প্রকাশিত চূড়ান্ত এনআরসিতে ১৯ লাখ আবেদনকারীকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সরমা পরামর্শ দিয়েছেন যে ৩.৩ কোটি লোক যারা এনআরসি-এর জন্য আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে যারা অন্তর্ভুক্ত নয় তাদের আধার কার্ড দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন,কোনও ব্যক্তির নাম এনআরসি-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কি না সেটা আলাদা বিষয়, তবে তার আবেদনকারী হওয়া উচিত। আপনি যদি আবেদন না করে থাকেন তাহলে তার মানে আপনি আসামে ছিলেন না। এ থেকে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা যায় যে ওই ব্যক্তি ২০১৪ সালের পর আসামে এসেছিলেন। তিনি আরও বলেছেন,আসামে পয়লা অক্টোবর থেকে আধার কার্ডের প্রাপ্যতা একটি কঠিন পরীক্ষা হবে। আমরা আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে একটি কঠোর এসওপি জারি করব। তিনি বলেছেন যে চা বাগান সম্প্রদায়কে প্রক্রিয়ার অসুবিধা থেকে রেহাই দেওয়া হবে, কারণ রাজ্য সরকার এখনও সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশে আধার কার্ড বিতরণ করতে সক্ষম হয়নি।।