এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৫ সেপ্টেম্বর : আরজি কর হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ বা গনধর্ষণ ও নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের মত ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবিতে তোলপাড় চলছে গোটা রাজ্য । এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত অনাড়ম্বরভাবে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হল শিক্ষক দিবস । কিন্তু আরজি করের ‘তিলোত্তমা’র শোকের আবহের মাঝেও কাটোয়া কলেজে শিক্ষক হিসেবে আমোদ ফুর্তিতে কোনো ঘাটতি পড়ল না । চটুল হিন্দি গানের তালে উদ্দাম নৃত্য করে দিনটা উদযাপন করতে দেখা গেল কলেজের বিএড বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের । যা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন নেটিজেনরা ।
সুনেত্রা মুখার্জি নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি পোস্ট করে মন্তব্য করেছেন, ‘যখন অভয়া বা তিলোত্তমার নৃশংস হত্যা ও গণধর্ষনের বিচার চেয়ে সারাদেশ প্রতিবাদে মুখর হয়ে আমোদ প্রমোদ বর্জন করছে,বাতি নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে, তখন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া কলেজর বিএড বিভাগের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে চটুল গানের সাথে ছাত্র ছাত্রীদের নাচ দেখুন। এদের কি মানবিকতা বলে কিছু নেই ? ছিঃঃ ছিঃ । প্লিজ যত পারুন শেয়ার করুন।’
তাঁর শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে,একটা হলঘরে জড়ো হয়েছে শাড়ি পরা বেশ কিছু তরুনী । তাদের সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু তরুন । হলঘরে বক্সে বাজছে নব্বইয়ের দশকে ‘মেরা লহু’ নামে এক হিন্দি ছবিতে গাওয়া অলকা ইয়াগনিকের ‘ম্যায় তো হুঁ এক বাঁশুরি, বাজানে বালা চাহিয়ে’ আইটেম গান । ভিডিওতে প্রথমে শাড়ি পরা ছাত্রীদের উদ্দাম নাচতে দেখা যায় । পরে কয়েকজন ছাত্র তাদের সাথে যোগ দেয় এবং শুরু হয় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দাম নাচানাচি । ভিডিওটি প্রথমে কাটোয় শহরের একটা ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছিল । কিন্তু অল্প কিছুক্ষণ পরেই কোনো কারনে ভিডিওটি ডিলিট করে দেওয়া হয় । অবশ্য তার আগেই ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি । যদিও ওই ভিডিও-এর সত্যতা যাচাই করেনি এইদিন ।
কিন্তু আরজি করের ‘তিলোত্তমা’র উপর ঘটে যাওয়া পাশবিক অত্যাচারের ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে যখন রাজ্যের সমস্ত স্তরের মানুষ পথে নেমে আন্দোলন করছেন,সেই আবহে কাটোয়া কলেজের বিএড পড়ুয়াদের শিক্ষক দিবসের দিন এই প্রকার উল্লাস মেনে নিতে পারছেন না কেউ । সুনেত্রা মুখার্জির পোস্ট করা ভিডিওতে ভিডিওয়ের কমেন্ট সেকশনে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন,’নির্লজ্জ এরা’,’এরা দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’ প্রভৃতি । তনুশ্রী গুড়িয়া নামে এক ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া,’এরা হয়তো ভুলে গেছে এদের ভাগের লড়াই টাও কেউ লড়ছে, এরা হয়তো ভুলে গেছে এরা যাতে স্বাধীন ভাবে বাঁচে তার জন্য কেউ নারী নিরাপত্তার জন্য কঠোর আইন চাইছে। কিন্তু যাদের জন্য বাকি সবাই লড়ছে তারাই আজ ফূর্তি তে মেতে উঠেছে। মানছি আজ শিক্ষক দিবস কিন্তু শিক্ষক দিবস কী এই ভাবে পালন হয় ? না আসলে আমি তো দেখিনি কোনদিন এতো শোকের মাঝেও কিছু মেয়েদের এতো ফূর্তি আসে বলে।’।