এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ আগস্ট : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসককে ধর্ষণ বা গনধর্ষণের পর নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তার অধীনে থাকা কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠছে । এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পরেও বিশেষ করে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের প্রতি মমতা ব্যানার্জির ‘সহানুভূতিশীল’ মানসিকতার কারন আজও অজ্ঞাত । রাজ্যে তো বটেই,দেশ ও বিদেশেও এই ইস্যুতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে মমতা ব্যানার্জিকে । ব্যাপক চাপের মধ্যে থাকা মমতা এখন ধর্ষণের ঘটনায় কঠোর আইন আইন আনার অজুহাতে আরজি কর কান্ডের বল কেন্দ্র সরকারের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন । এনিয়ে তিনি দু’বার চিঠিও লিখে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে । এবার মমতার এই প্রচেষ্টাতে জল ঢেলে দিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে উত্তর চেয়ে উক্ত আইন প্রনয়ণের দাবিতে দ্বিতীয় চিঠি লিখেছিলেন মমতা । শুক্রবারই তার জবাব দিয়ে দেন অন্নপূর্ণা দেবী। সেই চিঠিতে তিনি মমতা ব্যানার্জিকে পরামর্শ দিয়েছেন,ধর্ষণের মতো ঘটনার তদন্তে রাজ্য প্রশাসনের সব স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের আরও সংবেদনশীল ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে হবে । তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ধর্ষণ রোধে কড়া শাস্তি এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্তের যাবতীয় আইনি সংস্থান আছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায়। এমনকী, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে তথ্যগতভাবে ভুল বলেও জানিয়েছেন অন্নপূর্ণা দেবী । পশ্চিমবঙ্গে এখনও ৪৮,৬০০ টি ধর্ষণ এবং পকসো মামলার শুনানি শেষ হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি । এমনকি এই ধরনের কোর্টে বিচারবিভাগীয় আধিকারিকদের অভাব আছে বলে যে দাবি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা নস্যাৎ করে দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীর স্বাক্ষরিত ওই দু’পাতার উত্তরটি রিপোস্ট করে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এক্স-এ লিখেছেন,’কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দ্বিতীয় চিঠির জবাব দিয়েছেন, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট এবং সময়সীমার তদন্ত এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ, বিশেষত ধর্ষণের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানিয়ে। তিনি লেখেন…’এই বিষয়ে আপনার চিঠিতে থাকা তথ্য বাস্তবিকভাবে ভুল এবং রাজ্য দ্বারা FTSCs চালু করার বিলম্ব ঢাকতে এটি একটি পদক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি আরও যোগ করেছেন,’ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার তদন্ত সম্পূর্ণ করার বিধান রয়েছে যার মধ্যে ধর্ষণের ক্ষেত্রে ফরেনসিক পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এফআইআরের তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে এবং চার্জশিট দাখিলের দুই মাসের মধ্যে বিচার শেষ করা ।’আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যা মামলা থেকে মন সরানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরেকটি নিরর্থক প্রচেষ্টা ব্যর্থ গেল ।।