এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেনিয়া,২২ আগস্ট : কেনিয়ায় ৪২ নারীকে হত্যার অভিযুক্ত জেল থেকে পালিয়েছে৷ কেনিয়ার এই সিরিয়াল কিলার ব্যক্তি, যাকে ‘ভ্যাম্পায়ার’ বলা হচ্ছে, আরও ১২ জন অভিযুক্তের সঙ্গে জেল থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছে । কেনিয়ার অপরাধ তদন্ত বিভাগ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সহায়তায় জেল থেকে পালিয়েছে ওই ঘাতক ৷ কিছু সময় আগে, কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির একটি আবর্জনা ডাম্পিং সাইটে ৯ নারীর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। এর পর কেনিয়ার পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময়, জানা যায় যে এই সন্দেহভাজন একজন সিরিয়াল কিলার, যে ৪২ জন মহিলাকে হত্যা করার অভিযোগ স্বীকার করেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , নাইরোবির একটি অদ্ভুত ডাম্পিং সাইটে প্লাস্টিকের ব্যাগে বাঁধা নয়জন নারীর টুকরো টুকরো করা বিকৃত লাশ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তকে ১৫ জুলাই ভোর ৩ টার দিকে নাইরোবি বারের কাছে গ্রেপ্তার করা হয়। যেখানে অভিযুক্ত ২০২৪ সালের ইউরো কাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখছিল । অভিযুক্ত ৩৩ বছর বয়সী কলিন্স জুমাসি খালুশা(Collins jomaisi khalisia)। এখন জানা গেছে যে কলিন্স ২০ আগস্ট অন্য ১২ জন অভিযুক্তের সাথে জেল থেকে পালিয়ে গিয়েছে ।
কেনিয়ার অপরাধ তদন্ত অধিদপ্তরের প্রধান মোহাম্মদ আমিন বলেছেন যে কলিন্স আট পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় জেল থেকে পালাতে সক্ষম হন। দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী,আমিন বলেছেন যে কলিন্সকে সাহায্যকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন স্টেশন কমান্ডারও ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেলের তার কাটার পর আসামিরা দেয়াল থেকে লাফ দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ এই বিষয়ে জানতে পারে যখন একজন অফিসার তাদের সকালের খাবার দিতে আসেন এবং দেখেন যে অভিযুক্ত পলাতক ।আমিন বলেন,আমাদের প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা যায় যে পালানোর কাজটি অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের দ্বারা সহজতর হয়েছিল, কারণ স্টেশনটি রক্ষা করার জন্য কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছিল। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত কলিন্স জুমাসি খালুশা ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত তার স্ত্রীসহ ৪২ জন নারীকে হত্যা করেছে। মোহাম্মদ আমিন অভিযুক্তকে ‘ভ্যাম্পায়ার’ এবং ‘সাইকোপ্যাথ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছিলেন,আমরা একজন সিরিয়াল কিলার, একজন সাইকোপ্যাথ সিরিয়াল কিলারের সাথে মোকাবিলা করছি, যার কাছে মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকার করেছে যে সে ৪২ জন মহিলাকে প্রলুব্ধ করে তাদের হত্যা করে এবং তারপর টুকরো টুকরো করে আবর্জনার স্তুপে ফেলে দেয়। তার প্রথম শিকার ছিল তার স্ত্রী…যাকে সে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তারপর তাদের লাশ টুকরো টুকরো করে একই জায়গায় ফেলে দেয়।
আমিন বলেন যে ডিসিআই এবং জাতীয় পুলিশ একজন ভিকটিম এর ফোন পরীক্ষা করে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করেছে। তার মতে, অফিসাররা যখন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে আসে, তখন সে তার পরবর্তী ‘টার্গেট’ লোপাট করার চেষ্টা করছিল। তিনি বলেন, অভিযুক্ত স্বীকার করেছে যে তার কিছু ভিকটিমদের সঙ্গে ‘শারীরিক সম্পর্ক’ও ছিল।
গ্রেপ্তারের আগে, পুলিশ অভিযুক্তের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল,যেখান্ব মৃতদেহ পাওয়া যায় সেখান থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে ছিল তার বাড়ি । সেখান থেকে নারীদের অন্তর্বাস, বেশ কিছু আইডি কার্ড, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড ও একটি ছুরিসহ অনেক জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে।।