এইদিন ওয়েবডেস্ক,রাজস্থান,২০ আগস্ট : রাজস্থানের আজমিরে ১৯৯২ সালে ১০০ জনেরও বেশি স্কুল ও কলেজের মেয়েকে গণধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইল করার একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ওই ঘটনার ৩২ বছর পর ৬ আসামিকে সাজা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আজমিরের বিশেষ আদালত (পকসো আইন মামলা) এই 6 অভিযুক্তকে আজ দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে । এই মামলায় রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাডভোকেট বীরেন্দ্র সিং রাঠোর বলেছেন,’আদালত নাফীস চিশতি, নাসিম ওরফে টারজান, সেলিম চিশতী, ইকবাল ভাটি, সোহিল গণি, সৈয়দ জমির হুসেন, এই ৬ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।’
রাজস্থানের আজমিরে ১৯৯২ সালে ১০০ জনেরও বেশি স্কুল এবং কলেজের মেয়েকে গণধর্ষণ এবং ব্ল্যাকমেল করার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। এই মামলায় ১৮ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল । এর মধ্যে ৫ জন সাজা ভোগ করেছেন। খালাস পেয়েছেন ৪ জন। একজন আত্মহত্যা করেছিলেন। একজনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে এবং একজন আসামি পলাতক রয়েছে। আজ, ২০ আগস্ট মঙ্গলবার বাকি ছয় আসামির বিষয়ে আদালতের রায় আসে।
জানা গেছে,এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন স্থানীয় সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্ত ১৯৯২ সালের এপ্রিল মাসে এটি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন। স্কুল- কলেজগামী মেয়েদের প্রলুব্ধ করে প্রত্যন্ত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এক বা একাধিক লোক তাদের যৌন শোষণ করত বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, একটি মেয়ের মাধ্যমে তার বন্ধুরা প্ররোচিত হয়। একইভাবে চলতে থাকে যৌন শোষণের প্রক্রিয়া। মেয়েদের ধর্ষণ করা হয় এবং তাদের ছবি তোলা হয়। এরপর ওইসব ছবি দেখিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে চুপ থাকতে বাধ্য করা হত । পরে একটি ফটো ল্যাব থেকে মেয়েদের ছবি ফাঁস হয়ে যায় । সন্তোষ গুপ্তা নামে ওই সাংবাদিক ‘নবজ্যোতি নিউজ’-এ এই বিষয়ে প্রতিবেদন করেছিলেন। এরপরেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ ।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে এ মামলায় ১৮ জনকে আসামি করা হয়। ৩০ বছর আগে মামলা চলাকালীন একজন অভিযুক্ত আত্মহত্যা করেছিলেন । ৮ অভিযুক্তকে দোষী সব্যস্ত করে,১৯৯৮ সালে, আজমিরের একটি দায়রা আদালত তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
২০০১ সালে, রাজস্থান হাইকোর্ট এই ৮ জনের মধ্যে ৪ জনকে খালাস করে দেয়। ২০২৩ সালে, সুপ্রিম কোর্ট বাকি চার আসামি, মইজুল্লাহ ওরফে পুত্তন, ইশরাত আলী, আনোয়ার চিশতী এবং শামসুদ্দিনের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে। তার মানে এই চার আসামি ইতিমধ্যেই সাজা ভোগ করেছে ।
এই মামলায় আরও ৬ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিচার চলছিল, যাদের আজমির আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং সাজা দিয়েছে। এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আলমাস এখনও পলাতক, যার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের রেড কর্নার নোটিশ জারি করা হয়েছে। এতে আরও দুই আসামি ছিল, যাদের একজন ইতিমধ্যে সাজা ভোগ করেছেন এবং একজনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে । জানা গেছে,সাজাপ্রাপ্ত ৬ জন হল আজমির দরগাহের খাদিম এবং কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা বলে পরিচিত ।।