এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ আগস্ট : আজ কন্যাশ্রী দিবস । কন্যাশ্রী প্রকল্পের সফলতা নিয়ে ফলাও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে নেটিজেনদের শিকার হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । আরজি কর হাসপাতালে তরুনী চিকিৎসককে গনধর্ষণ হত্যার ঘটনা নিয়ে তোলপাড়ের মাঝেই রাজ্য সরকারের এই কন্যাশ্রী উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে কোথাও কোথাও । বিধানসভার সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’আমি অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম, আরজি করের আমাদের অত্যন্ত প্রিয় বোনকে নিয়ে এত ঘটনা ঘটছে, কেউ অভয়া নাম দিয়েছেন কেউ তিলত্তমা নাম দিয়েছেন, এই বোনটির জন্য আমরা সবাই দলমত বর্ণ, ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে ব্যথিত৷ যারা কোনদিন রাস্তায় নামেননি তারাও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন৷ শুধু রাজ্য নয় গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে এই প্রতিবাদ হচ্ছে । চিকিৎসক নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা আজকে একদিনের প্রতিকী ধর্মঘট করছেন । আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং কৃতজ্ঞ যে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর আজকে আউটডোর করছেন না ৷ আর এই মুখ্যমন্ত্রীর এবং তার সরকারের লাজ লজ্জা কিছুই নেই । আজ কন্যাশ্রী দিবস । এটার তারিখ হয়ত পিছনো যায় না। কিন্তু আজকে আমাদের বোনের জন্য এই উৎসবটা বন্ধ করতে পারতেন মুখ্যমন্ত্রী । তা না করে তিনি ধনধান্য স্টেডিয়ামে ৩,০০০ জনের একটা উৎসব করছেন । লজ্জা শরম ছেড়ে যে উৎসবে মন্ত্রী শশী পাঁজা, দপ্তরের আধিকারিক, রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ও সদস্যরাও হাজির হবেন । সকালবেলায় মেসেজ করা হয়েছে তিন হাজার প্যাকেট চিকেন বিরিয়ানি খাওয়ানো হবে,রাজ্য সরকারের অর্থে । ধনধান্যের ব্যাঙ্ককোয়েটে প্যাকেট বিলি করা হবে । মেনু ঠিক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে । চিকেন বিরিয়ানি ! ভাবুন, কোন রাজ্যে আমরা বসবাস করছি । এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই ।’
তিনি বলেন,’একদিকে গোটা বাংলা বাঙালি কাঁদছে এবং ভারতবর্ষ তাদের সামিল হয়েছে । মহিলারা আতঙ্কিত । যারা একটা সময় মমতা ব্যানার্জির জন্য গলা পাঠিয়েছিলেন এমন কিছু বিশিষ্ট মহিলারাও বলছেন, ‘আর নয়, সহ্য করা যাচ্ছে না ৷ পথে নামবো, রাতে থাকবো ।’ গতকাল খড়গপুর আইআইটির ছাত্রছাত্রীরা রাত কাটিয়েছে । আর মুখ্যমন্ত্রী ৩০০০ প্যাকেট বিরিয়ানির অর্ডার দিয়েছেন উৎসব করার জন্য । লজ্জা লজ্জা লজ্জা মমতা ব্যানার্জি । আমাদের একটাই দাবি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করুন ।’
সেই সাথে শুভেন্দু অধিকারী এনিয়ে টুইটও করেছেন । তিনি লিখেছেন,’গোটা রাজ্যের মানুষ তথা সমগ্র দেশ যখন আর জি কর এর নৃশংস অত্যাচার ও হত্যার ঘটনার তদন্ত কে বাধা দানের নিন্দায় সরব, সবাই যখন রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্লজ্জতার সীমা ছাড়িয়ে ‘কন্যাশ্রী দিবস’ উৎসব করছেন।যখন পশ্চিমবঙ্গের এক কন্যার উপর পাশবিক অত্যাচার ও নৃশংস হত্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মাতৃশক্তি ক্রোধে ও যন্ত্রনায় ক্ষুব্ধ তখন চিকেন বিরিয়ানি সহযোগে ‘কন্যাশ্রী দিবস’ উৎসব পালন একমাত্র মমতা ব্যানার্জির পক্ষেই সম্ভব।
মমতা ব্যানার্জি এতোটাই নির্লজ্জ যে নন্দীগ্রামে আমার কাছে পরাজিত হয়েও মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে রয়েছেন। ওনার এই নির্লজ্জতা সর্বজনবিদিত।লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা।’
আর জি কর হাসপাতালের ঘটনায় আজ বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিধানসভায় বিজেপির বিধায়করা অবস্থান বিক্ষোভ করেন । ঘন্টা তিনেক ধরে এই বিক্ষোভ চলে ।।