এইদিন ওয়েবডেস্ক,দুর্গাপর(পশ্চিম বর্ধমান),১২ আগস্ট : মার্শাল আর্টস বা ক্যারাটে হল শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি ও আত্মরক্ষার একটা কৌশল । শুধু তাইই নয়,চরিত্র গঠনের জন্য ক্যারাটে শিক্ষার একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷ প্রাচীন ভারতের গুরুকুলে শিক্ষা ব্যবস্থার মত গুরু-শিষ্য পরম্পরার ঐতিহ্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায় মার্শাল আর্টসের মধ্যে । মার্শাল আর্টসকে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন হংকং -আমেরিকান মার্শাল আর্টিস্ট এবং অভিনেতা ব্রুস লি । এক সময়ে ভারতের প্রতিটি প্রান্তে মার্শাল আর্টস ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফুটবল, কবাডি, ক্রিকেট প্রভৃতি খেলাধুলার পাশেই জায়গা করে নেয় ক্যারাটেও ।
কিন্তু চলতি দশকে স্মার্টফোনের বাড়বাড়ন্তে খেলাধুলার প্রতি বিমুখ হয়ে ওঠে তরুন প্রজন্ম ।এদিকে নগরায়নের কারনে খেলার মাঠও সীমিত হয়ে গেছে । আর এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে তরুন প্রজন্মের শারীরিক সক্ষমতা ও পড়াশোনা উপর । এই পরিস্থিতিতে যেকারণে অবিভাবকরা তাদের সন্তানদের খেলাধুলার বিকল্প হিসাবে বেছে নিচ্ছেন ক্যারাটেকে । তবে সাম্প্রতিক সময়ে মার্শাল আর্টস প্রশিক্ষণে মেয়েদের উপস্থিতির ক্রম বৃদ্ধি একটা উল্লেখ্যোগ্য বিষয় ৷
পূর্ব বর্ধমান জেলায় যে সমস্ত মার্শাল আর্টস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি আজও এই আত্মরক্ষার বিশেষ কৌশলকে টিকিয়ে রেখেছে,তার মধ্যে একটি সুপরিচিত নাম হল পূর্ব বর্ধমান সেইসিনকেই সিতো-রিউ ক্যারাটে অ্যাসোসিয়েশন । অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রেনসি দেবাশীষ কুমার মন্ডলের শিষ্যশিষ্যারা ইতিমধ্যে বহু পদক এনে দিয়েছে বর্ধমানকে । আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে তার শিক্ষার্থীদের সিংহভাগই অল্প বয়সী কিশোরী, অথবা তরুনী বা গৃহবধূ । ফের একবার নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দিল দেবাশীষবাবুর শিক্ষার্থীরা ।
রবিবার(১১ আগস্ট) দুর্গাপুরের সিধু কানহু ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল ‘সেইসিনকেই ওপেন সাউথ বেঙ্গল ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ – ইন্ডিপেন্ডেস কাপ ২০২৪‘। বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়া জেলার মোট প্রায় ৬৫০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে । দেবাশীষ মন্ডল জানিয়েছেন,এই প্রতিযোগিতায় তার ৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল এবং মোট ১১ টি পদক জয়লাভ করেছে তারা । ওই ১১ পদকের মধ্যে রয়েছে ৭ টি সোনা, ৩ টি রুপো এবং ১ টি ব্রোঞ্জ । তিনি আরও জানান, কাতা ও কুমিতে বিভাগে ১ টি করে সোনা ও ১টি করে রুপো পেয়েছে বৈদ্যুতি মন্ডল, লগ্নজিতা খাঁ ও শ্রেয়সী ঘোষ ৷ মেঘনা রায় পেয়েছে ১টি সোনা ও ১টি ব্রোঞ্জ । অয়নতিকা সাহা, চন্দ্রিমা চক্তবর্তী ও স্নেহাশ্রী দাস ১টি করে স্বর্ণপদক জয়লাভ করেছে।
প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করা হয় ওয়ার্ল্ড ক্যারাটে ফেডারেশনের রেফারি হানসি প্রেমজিত সেনের তত্ত্বাবধানে এবং দুর্গাপুর সেইসিনকেই ক্যারাটে অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালনায় ।।