এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৯ আগস্ট : প্রতিবছর ২৫ শ্রাবণ বাবা বর্ধমানেশ্বারের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষ্যে বর্ধমান থেকে কাটোয়ায় পবিত্র গঙ্গাজল যাত্রার আয়োজন করা হয় । তার আগের দিন সকালে পূণার্থীরা কাটোয়ায় ভাগিরথীর ঘাটে পূণ্যস্নান করে কলসে গঙ্গাজল ভরে পায়ে হেঁটে বর্ধমান শহরের বাবা বর্ধমানেশ্বারের মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হন । বর্ধমানে পৌঁছে বাবা বর্ধমানেশ্বারের জলাভিষেক করেন তারা । আগামীকাল শনিবার বর্ধমানেশ্বারের আবির্ভাব দিবস । তাই আজ শুক্রবার সকাল থেকে অসংখ্য লরি, চারচাকা গাড়ি, টোটো এবং এমনকি সাইকেলে চড়ে পূণ্যার্থীদের কাটোয়া মুখে যেতে দেখা যায় । দুপুর থেকে পূণ্যার্থীদের দল কাঁধের বাঁকে ঝোলানো গঙ্গাজল ভর্তি কলস নিয়ে বর্ধমান- কাটোয়া রাজ্য সড়ক ধরে পায়ে হেঁটে বাবা বর্ধমানেশ্বারের মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হন । অনান্য বছরের মত এবারেও পূণ্যার্থীদের সহায়তায় প্রতিটি বাজারে জল,সরবত, মিষ্টি,লুচি প্রভৃতি খাদ্যসামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে । শিবভক্তদের দেখার জন্য প্রচুর মহিলা ও পুরুষ উপস্থিত থাকতে দেখা যায় প্রতিটি বাজারে৷
তবে সকলের নজর কেড়ে নেয় ৯ মাসের এক শিশুকন্যা ৷ বছর পঁচিশের এক পূণার্থী যুবককের কাঁধে রাখা সুসজ্জিত বাঁকের একপ্রান্তে গঙ্গাজল ভর্তি একটা বড় কলস এবং অন্যপ্রান্তে একটা বড় ঝুড়িতে তোয়ালে বিছিয়ে ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে যেতে দেখা যায় । ছোট্ট শিশুটিকেও বাজারের দৃশ্য দেখতে দেখতে খোশ মেজাজে যেতে দেখা যায় । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে যুবক হাঁটতে হাঁটতে এলে শিশুটি সকলের নজর কেড়ে নেয় । অনেককে হাসাহাসিও করতে দেখা যায় ।
দেখুন ভিডিও 👇
যুবক জানান তার নাম রাজু দাস । বাড়ি বর্ধমান শহরের বিজয়রামে । তার ৯ মাসের মেয়ের নাম তিতলি । তিনি জানান,আজ সকালে তিনি,তার স্ত্রী, মেয়ে,ভাই ও বাবার সাথে কাটোয়ার ভাগিরথীকে জল আনতে গিয়েছিলেন । সাথে ছিল দুই নাবালিকা শালিকাও । পায়ে হেঁটে বাবা বর্ধমানেশ্বারের মন্দিরে পৌঁছতে সকাল হয়ে যাবে । তারপর বাবাকে জলাভিষেক করিয়ে তারপর সকলে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান তিনি । কিন্তু দুধের শিশু তিতলিকে এতটা পথ এভাবে ঝুঁড়িতে বসিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কেন নিলেন ? উত্তরে রাজু দাস বলেন,’বাবা বর্ধমানেশ্বরের কাছে মানসিক করেছিলাম মেয়ে হলে বাঁকে করে মেয়েকে নিয়ে গিয়ে বাবার মাথায় জল ঢালব । আর বাবার আশীর্বাদে আমি আজ কন্যাসন্তানের পিতা । তাই বাবার কাছে করা মানত পূর্ণ করতে মেয়েকে বাঁকের সাথে বাঁধা একটা ঝুড়িতে বসিয়ে কাটোয়ার ভাগিরথীতে পূণ্যস্নান করতে এবং গঙ্গাজল আনতে গিয়েছিলাম।’
তবে গঙ্গাজল ভর্তি একটা ২০ লিটারের স্টিলের কলস ও মেয়েকে বাঁকে চাপিয়ে একটানা অতটা পথ পায়ে হেঁটে যাওয়া রাজুর পক্ষে সম্ভব হয়নি । কিছুটা পথ অন্তর রাজুর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তার ভাই । উল্লেখ্য,অনান্য বছরের মত এবারেও বাবা বর্ধমানেশ্বারের জলাভিষেকের জন্য কাটোয়ার ভাগিরথীর ঘাটে লক্ষাধিক শিবভক্ত মহিলা ও পুরুষের সমাগম হয়েছিল ।।