এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঝাড়গ্রাম,০৮ আগস্ট : ঝাড়গ্রামের স্কুল শিক্ষিকা আদিবাসী তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস করে যাচ্ছিল এক শাল বিক্রেতা কাশ্মিরী যুবক । তরুনী বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে । তারপরেও সে তরুনীকে নিস্তার দেয়নি । অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেলিং করে তরুনীর কাছ থেকে সে কয়েক দফায় মোট ৭ লক্ষ টাকা আদায় করেছিল বলে অভিযোগ । শেষ পর্যন্ত তরুনী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে যুবককে শনিবার তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম রিয়াজ আহমেদ রায়নার । তার বাড়ি কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার অকাড গ্রামে । ধৃতকে অনন্তনাগ জেলা আদালতে তুলে ৫ দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসার পর বুধবার ঝাড়গ্রামের বিশেষ দায়রা আদালতে তোলা হলে তাকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,ফেসবুকে শাল বিক্রেতা রিয়াজ আহমেদ রায়নার সঙ্গে পরিচয় হয় তরুনীর । ২০১৫ সাল থেকে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব ক্রমে প্রেমে রুপান্তির হয় । কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে বেড়াতে যায় ওই তরুনী । সেই সময় হোটেলে দিনের পর দিন সে শারিরীক সম্পর্ক করে বলে অভিযোগ । কিন্তু তরুনী বিয়ের জন্য চাপ দিলে রিয়াজ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে । পাশাপাশি বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যার কথা বলে পরে পরিশোধ করে দেওয়ার নাম করে তরুনীর কাছ থেকে দফায় দফায় টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে । তরুনী পরে রিয়াজ আহমেদকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে । তারপরেও তরুনীর অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রিয়াজ আহমেদ ধর্ষণ ও টাকা আদায় করে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ । এমনকি ঘটনার কথা ফাঁস করলে সে তরুনীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা তরুনী ।
শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা । পুলিশ রিয়াজের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি তরুনীর ডাক্তারি পরীক্ষা করায় । এদিকে বেগতিক বুঝে তার আগেই চম্পট দেয় রিয়াজ আহমেদ । তাকে ফেরার দেখিয়ে গত ৬ জুন ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। আদালত রিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে । এরপর পুলিশ তাকে হন্নে হয়ে খুঁজতে শুরু করে । শেষ পর্যন্ত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার হদিশ পেয়ে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার সাব ইন্সপেক্টর জ্যোতি সাউয়ের নেতৃত্বে একটি দল শনিবার অনন্তনাগ জেলার অকাড গ্রামে হানা দিয়ে রিয়াজকে পাকড়াও করে ।।