নিরসন্তি সদা দেহে দেহশেষেঽপি সর্বদা ।
সর্বে দেবাশ্চ ঋষয়ো যোগিনো দেহরক্ষকাঃ ।। ৪১ ৷৷
সর্বদা গীতা অধ্যয়নকারীর দেহে, বা দেহত্যাগের পরও দেহরক্ষক রূপে দেবতা, ঋষি বা যোগীরা অবস্থান করেন।
গোপালো বালকৃষ্ণোঽপি নারদধ্রুবপার্ষদৈঃ ।
সহায়ো জায়তে শীঘ্রং যত্র গীতা প্রবর্ততে ৷৷ ৪২ ৷৷
যেখানে গীতা বর্তমান থাকেন, সেখানে নারদ, ধ্রুব আদি পার্ষদবৃন্দসহ স্বয়ং বালগোপাল শ্রীকৃষ্ণ সহায়-রূপে আবির্ভূত হন।
যত্র গীতা বিচারশ্চ পঠনং পাঠনং তথা ।
মোদতে তত্র শ্রীকৃষ্ণো ভগবান্ রাধয়া সহ ৷৷ ৪৩ ।।
যে স্থানে গীতা শাস্ত্রের বিচার এবং পঠন-পাঠন হয়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সে স্থানে শ্রীরাধিকার সঙ্গে পরমানন্দে বিরাজ করেন।
ভগবান উবাচ
গীতা মে হৃদয়ং পার্থ গীতা মে সারমুত্তমম্।
গীতা মে জ্ঞানমত্যুগ্রং গীতা মে জ্ঞানমব্যয়ম্ ৷৷ 88 ।।
শ্রীভগবান বললেন, – হে পার্থ! গীতা আমার হৃদয়, গীতা আমার উত্তম সার-স্বরূপ, গীতা আমার অত্যুগ্র জ্ঞান এবং গীতাই আমার অব্যয়-জ্ঞান।
গীতা মে চোত্তমং স্থানং গীতা মে পরমং পদম্।
গীতা মে পরমং গুহ্যং গীতা মে পরমো গুরু ৷৷ ৪৫ ৷৷
গীতা আমার উত্তম স্থান, গীতা আমার পরমপদ, গীতা আমার পরম গোপনীয় বস্তু, বিশেষ কি গীতাই আমার পরম গুরু।
গীতাশ্রয়েঽহং তিষ্ঠামি গীতা মে পরমং গৃহং ।
গীতাজ্ঞানং সমাশ্রিত্য ত্রিলোকীং পালয়াম্যহম্ ।। ৪৬ ৷৷
গীতার আশ্রয়েই আমি বর্তমান আছি, গীতাই আমার পরম গৃহ। এই গীতাজ্ঞানকে সম্যকভাবে আশ্রয় করেই আমি ত্রিলোক পালন করে থাকি।
গীতা মে পরমা বিদ্যা ব্রহ্মরূপা ন সংশয়ঃ।
অর্ধমাত্রাহরা নিত্যমনিৰ্বাচ্যপদাত্মিকা ৷৷ ৪৭ ।।
অর্ধমাত্রা-স্বরূপা নিত্য অনির্বাচ্যপদাত্মিকা গীতাই আমার ব্রহ্মরূপা পরাবিদ্যা –তা নিঃসংশয়ে জানবে।
গীতা নামানি বক্ষ্যামি গুহ্যানি শৃণু পাণ্ডব ।
কীর্তনাৎ সর্বপাপানি বিলয়ং যান্তি তৎক্ষণাৎ || ৪৮ ||
হে পাণ্ডব! গীতার যে নামসমূহ কীর্তনের দ্বারা তৎক্ষণাৎ সমস্ত পাপ ধ্বংস হয়,সেই গোপনীয় নাম সকল বলছি, শ্রবণ কর।
গঙ্গা গীতা চ সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা ।
ব্রহ্মাবলিব্রহ্মবিদ্যা ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী ৷৷ ৪৯ ৷৷
অর্ধমাত্রা চিদা নন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী ।
বেদত্রয়ী পরানন্দা তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী || ৫০ ৷৷
ইত্যেতানি জপেন্নিত্যং নরো নিশ্চলমানসঃ ।
জ্ঞানসিদ্ধিং লভেন্নিত্যং তথান্তে পরমং পদম্ ৷৷ ৫১ ৷৷
গঙ্গা, গীতা, সাবিত্রী, সীতা, সত্যা, পতিব্রতা, ব্রহ্মাবলী, ব্রহ্মবিদ্যা, ত্রিসন্ধ্যা,মুক্তগেহিনী, অর্ধমাত্রা, চিদানন্দা, ভবঘ্নী, ভ্রান্তি-নাশিনী, বেদত্রয়ী, পরানন্দা,
তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী যে মানুষ অচঞ্চলচিত্তে এই গুপ্ত নাম সমূহ নিত্য জপ করেন, তিনি দিব্যজ্ঞান-সিদ্ধি লাভ করেন এবং অন্তে পরমপদ প্রাপ্ত হন।
পাঠেঽসমর্থঃ সম্পূর্ণে তদর্থংপাঠমাচরেৎ।
তদা গোদানজং পুণ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ ৷৷ ৫২ ৷৷
সম্পূর্ণ গীতাপাঠে অসমর্থ হলে তার অর্ধাংশ পাঠ করবে। তাতে নিঃসন্দেহে গো-দান জনিত পুণ্য লাভ হবে।
ত্রিভাগং পঠমানস্তু সোমযাগফলং লভেৎ ।
ষড়ংশং জপমানস্তু গঙ্গাস্নানফলং লভেৎ ৷৷ ৫৩ ৷৷
এক-তৃতীয়াংশ গীতা পাঠে সোম-যজ্ঞের ফল এবং এক-ষষ্ঠাংশ জপে গঙ্গাস্নান ফল লাভ করবে।
তথাধ্যায়দ্বয়ং নিত্যং পঠমানো নিরন্তরম্ ।
ইন্দ্ৰলোকমবাপ্নোতি কল্পমেকং বসেধ্রুবম্ ৷৷ ৫৪ ৷৷
যিনি নিষ্ঠাসহকারে নিত্য গীতার দুটি অধ্যায় পাঠ করেন, তিনি নিঃসন্দেহে ইন্দ্রলোক লাভ করে সেখানে কল্পকাল বাস করেন ।
★ ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট,ইসকন মায়াপুর ধাম থেকে মুদ্রিত শ্রীমদ্ভগবদগীতা মাহাত্ম্য পুস্তক থেকে সংগৃহীত ।