এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ জুলাই : রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে ‘বালু’র ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বারিক বিশ্বাসের বসিরহাটের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ও সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পাশাপাশি অভিযানে একাধিক নথি হাতে এসেছে বলে দাবি ইডির। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত একপ্রস্ত তল্লাশি অভিযান চলে । পরের দিন মঙ্গলবার ভোরে বসিরহাটের সংগ্রামপুরে বারিকের বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডি । শেষ করে দুপুর ২টো ২০ মিনিট নাগাদ । বসিরহাট, বারাসত, রাজারহাটে বারিকের রাইস মিল,একাধিক অফিস, ও ফ্ল্যাট মিলে প্রায় ২১ ঘন্টা ইডির অভিযান চলে । মঙ্গলবার বারিকের রাইসমিলে প্রায় ১৩.৫০ ঘন্টা অভিযান চালানোর পর সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিট নাগাদ বেরিয়ে আসেন ইডি আধিকারিকেরা । বারিক বিশ্বাস সোনা পাচারেও যুক্ত ছিল । তাকে ২০১৫ সালে প্রচুর সোনা-সহ গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দফতর। কয়েক বছরের জন্য জেলেও গিয়েছিল বারিক । পরে জামিনে মুক্তি পান । সেই সূত্রেই তাঁর কাছে সোনার বিস্কুট রয়েছে বলে সন্দেহ ইডির । যদিও জেরায় তার কোনো সদুত্তর দেননি বারিক ।সেই কারণে তাকে শুক্রবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে দপ্তরে তলব করেছে ইডি ।
প্রসঙ্গত,সন্দেশখালির ‘ত্রাস’ শেখা শাহজাহানের থেকে বারিক বিশ্বাসের উত্থান ও ধনকুবের হয়ে ওঠা কম রোমাঞ্চকর নয় । মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের সময়েই পেশায় ট্রাকচালক বারিক বিশ্বাস হয়ে ওঠে কুখ্যাত গরু পাচারকারী । গরু পাচারকারীদের সঙ্গে সখ্যতার সুবাদে বসিরহাটের স্বরূপনগর থেকে শুরু করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে তার পাচারের রমরমা কারবার চলত । পরবর্তী সময়ে সময়ে গোটা রাজ্যেই সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচারের কারবারের জাল বিস্তার করে বারিক। সোনা পাচারের দায়ে কয়েক বছর কারাবাসের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে নিজের ব্যবসায়িক স্বরূপ বদলে ফেলেন বারিক । একে একে গড়ে তোলেন ইটভাটা, কয়লা, ট্রাকের ব্যবসা এবং এমনকি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও । আর তারপর থেকে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা শুরু হয় তার৷ অল্প দিনের মধ্যেই খাদ্যমন্ত্রী জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকে কাছের লোক হয়ে ওঠেন বারিক বিশ্বাস । ইডির আশা রেশন দুর্নীতি মামলার গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতে পারে তার কাছ থেকে৷
তবে শুধু বারিক বিশ্বাস নয়,জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আর এক ঘনিষ্ঠ বাকিবুরের দুই আত্মীয় দেগঙ্গার বেড়াচাপার মুকুল রহমান ও আনিসুর রহমানের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি । অল্প দিনের মধ্যে কোটিপতি হয়ে ওঠার রহস্য সন্ধান করতে ওই দু’জনকেও ইডি সিজিও কমপ্লেক্সে দপ্তরে তলব করেছে বলে খবর ।।